আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় ঔদ্ধত্যপূর্ণ বাক্য উচ্চারণ করেছেন এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। তিনি বলেছেন, ‘বলে দিলে হয় আপনাদের ফাঁসি রেডি, দড়ি দিলেই হয়।’
বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আদালতে জিয়াউল আহসানসহ আটজনকে হাজিরা করা হয়। অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
গ্রেপ্তার দেখানোর পর তাদের আটজনকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে জিয়াউল আহসান ঔদ্ধত্যপূর্ণ এই বাক্য উচ্চারণ করেন।
এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী ও অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার।
ওইদিন সকাল ১০টার দিকে দুটি প্রিজন ভ্যানে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক এসপি আব্দুল্লাহ আল কাফি, ডিএমপির মিরপুরের সাবেক উপকমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক আরাফাত হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য দুই মাসের সময় প্রার্থনা করলে ট্রাইব্যুনাল এক মাস সময় দেন এবং ১৯ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
শুনানির শেষ দিকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান। ওই সময় তাঁকে বসাতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে ধমক দিয়ে সরিয়ে দেন তিনি। এজলাস ছাড়ার আগে জিয়াউল আহসানের আইনজীবী বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তাঁর মক্কেল কথা বলতে চান।
এ সময় কাঠগড়া থেকে জিয়াউল আহসান বলেন, ‘আমি আয়নাঘরে কখনও চাকরি করিনি। আমার নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমি যেখানে কাজ করেছি, সেটা সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল ছিল।’ জবাবে ট্রাইব্যুনাল বলেন, তদন্ত চলছে। আপনার আইনজীবী আছে, যা বলার তাঁর মাধ্যমে বলবেন।
বিচারপতিরা এজলাস ছাড়ার পর পুলিশ সদস্যরা আসামিদের হাজতখানায় নেওয়ার জন্য যান। এ সময় জিয়াউল আহসান তাদের বলেন, ‘কেউ আমাকে ধরবে না, কাছে আসবে না। তোমরা মার খেয়েছ, ভবিষ্যতে আরও খাবে। আমাকে জেলখানায় কাগজ-কলম দেওয়া হয় না, আমি লিখব। আমার বিরুদ্ধে যা বলেছে, তা আমাকে লিখিত দাও।’
সে সময় তাকে বেশ উত্তেজিত দেখা যায়। তবে আইনজীবী জেনারেল জিয়াউল আহসানকে আশ্বস্ত করে বলেন, পরে সবই দেওয়া হবে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
আইন ও আদালত এর সর্বশেষ খবর