• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
মোঃ আনোয়ার হোসেন আকাশ
রাণীশংকৈল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:৫৭ দুপুর
bd24live style=

মোকসেদুরের বিরুদ্ধে  স্ত্রী নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নিজের পদবী কেবল গাড়ির ড্রাইভার। কিন্তু বিচারকের গাড়ি চালান বলে ধরাকে সরাজ্ঞান করেন নিজেকে। বিশেষ সুযোগ-সুবিধায় চাকুরী গ্রহণ, যৌতুকের জন্য প্রথম স্ত্রীকে অকথ্য নির্যাতন-ভ্রূণ হত্যা ও আদালত চত্বরে দোকান ঘর লিজসহ অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ ওঠার পর এবার জেলা ও দায়রা জজ এবং বিভিন্ন দপ্তরে মোকসেদুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি।

অভিযোগকারী মনিরুজ্জামান ঠাকুরগাঁও সদরের নারগুন ইউনিয়নের পূর্ব নারগুন এলাকার ইব্রাহীম খলিলে ছেলে এবং অভিযুক্ত মোকসেদুর রহমান একই ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে। তিনি ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকের গাড়িচালক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের ইব্রাহীম খলিলের মেয়ে আফরোজা আক্তারের সঙ্গে মোকসেদুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর স্ত্রী নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করেন তিনি। এ সুবাদে ব্যবসা করবেন বলে মোকসেদুর তার স্ত্রীর বড় ভাই মনিরুজ্জাকমানের কাছে ৭ লাখ টাকা হাওলাদ নেন। এরপর নিয়োগ পরিক্ষায় উৎকোচ ও আওয়ামী লীগের দলীয় সুযোগ-সুবিধায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গাড়ি চালকের চাকুরী হাতিয়ে নেন। হঠাৎ বিচারকের ড্রাইভার বনে যাওয়ায় হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। বিচারকের প্রভাব খাটিয়ে করতে থাকেন একের পর এক অনিয়ম। এরপর যৌতুকের জন্য চলে স্ত্রীর উপর নির্মম নির্যাতন। এতে তার স্ত্রী প্রতিবাদ করলে মোকসেদুর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। আরো ৭ লাখ টাকা যৌতুক না পেলে সংসার করবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন ড্রাইভার মোকসেদুর।

এদিকে মনিরুজ্জামান হাওলাদী ৭ লাখ টাকা মোকসেদুরের কাছে চাইতে গেলে উলটো টাকা দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন এই ড্রাইভার। বলে আমি বিচারকের ড্রাইভার অন্যখানে বিয়ে করলে ২০/২৫ লাখ টাকা যৌতুক পেতাম। এরপর প্রচণ্ড মারধরের ফলে তার স্ত্রীকে জখম করে ফেলিয়ে যায়। খবর পেয়ে মনিরুজ্জামান তার বোন আফরোজাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়।

আরো জানা গেছে, স্ত্রী আফরোজার সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় তার গর্ভে সন্তান আসে। ওই সন্তানকে নষ্ট করার জন্য মোকসেদুর প্রচণ্ড চাপ দেয়। গর্ভে আসা সন্তান নষ্ট করবে না বলে মোকসেদুরকে জানালে পুনরায় আফরোজাকে মারধর করে। অকথ্য নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাধ্য হয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে আফরোজা। এরপর আফরোজার বাবা সহ আরো কয়েকজন ঘটনা জানার পর মোকসেদুরের বাড়িতে গেলে তার বাবা নুর মোহাম্মদ জানায় যৌতুকের যে বাকি টাকা আছে সেটা আগে দেন। আর না হলে মেয়েকে নিয়ে যান। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের কারণে আফরোজার বাবা ঠাকুরগাঁও সদর থানায় অভিযোগ করতে গেলে মোকসেদুরের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার জন্য সদর থানা পুলিশকে নিষেধ করা হয়।

এরপর আফরোজার বড় ভাই মনিরুজ্জামান তাঁর হাওলাদী টাকা ও বোনের উপর নির্মম নির্যাতনের বিচার চেয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক অতিরিক্ত জেলা জজ গাজী দেলোয়ার হোসেনের শরণাপন্ন হয়। তখন আফরোজা, মনিরুজ্জামান ও বাবাকে চেম্বারে তলব করে পুরো ঘটনা শুনেন সাবেক এই বিচারক। ঘটনা শোনার পর সাবেক বিচারক ও সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে গত বছরের ২ জানুয়ারি আফরোজা আক্তারকে ডিভোর্স দেয় ড্রাইভার মোকসেদুর রহমান।

বিচারকের চেম্বার থেকে বের হওয়ার পথে পুনরায় সাবেক বিচারক তলব করে আফরোজার পরিবারকে এবং জানায় ড্রাইভার মোকসেদুরের চেক, আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট সাইজের স্বাক্ষর-যুক্ত ছবি গুলো ফেরত দেন। আর কেউ মোকসেদুরের বিরুদ্ধে কোনোদিন কোন মামলা করতে পারবে না মর্মে ১০০ টাকা মূল্যে ৩টি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আফরোজার বৃদ্ধ বাবা ও তাঁর বড় ভাইয়ের কাছে মুচলেখায় সই করে নেন মোকসেদুর। 

এরপর থেকেই এই ড্রাইভার আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তবে ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি ও ১ মার্চ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ঠাকুরগাঁও শাখা থেকে ড্রাইভার মোকসেদুর রহমানের স্বাক্ষরিত Ac-২৩৩১০৮০০০০০০০ অ্যাকাউন্ট নাম্বারে খন্দকার আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির নামে ঢাকার বনশ্রী শাখায় দুই দফায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দেয়াড় দুইটি ব্যাংক স্লিপ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে খন্দকার আরিফুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক বিচারক মামুনুর রশিদের ব্যক্তিগত সহকারি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, মোকসেদুরের পরিবার নোয়াখালী থেকে এসেছে। তাঁরা স্থানীয় না। তাঁর পরিবার খুবই অসচ্ছল ছিলো। পাশেই গ্রামেই বিয়ে করে যৌতুকের জন্য প্রায় স্ত্রীকে মারধর করতো। আর বিচারকের ড্রাইভার হওয়ার পর আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। রাতারাতি বাড়ি গাড়ি ও দোকানপাট গড়ে তুলেন। বিচারকের নাম ভাঙিয়ে যা ইচ্ছা তাই করেছে এই মোকসেদুর। বিচারকের গাড়ি চালায় বলে এলাকার কেউ তাঁর সঙ্গে ভয়ে কথা বলতো না। বিচার বিভাগ থেকে তদন্ত করলেই মোকসেদুরের আসল চরিত্র বেড়িয়ে আসবে বলে জানান তারা।

এ ব্যাপারে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিয়ে এক বছর মোকসেদুর আমার বাড়িতেই ছিলো। ব্যবসা করবে বলে সাড়ে ৭ লাখ টাকা আমার কাছে হাওলাদ নেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলে আমার বোনের উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় মোকসেদুর। আর বলে কোনো টাকা দিতে পারবো না। আমি জজ এর ড্রাইভার। কেউ কিছু করতে পারবে না আমার। আর সব সময় অতিরিক্ত জেলা জজ গাজী দেলোয়ার হোসেন স্যারের ভয় দেখাতো আমাদের। অনেকবার আমার বোনের উপর যৌতুকের জন্য নির্যাতনের সু-বিচার চেয়ে কারো কাছে অভিযোগ করতে পারিনি। তাই আশা করি আমার বোনের উপর যৌতুকের জন্য নির্যাতনকারী এবং গর্ভের ভ্রূণ নষ্টকারী মোকসেদুরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন কর্তৃপক্ষ।

তবে সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ড্রাইভার মোকসেদুর রহমান বলেন, অনেক আগেই আমার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এ অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, জেলা জজ আদালতের বিচারকের গাড়িচালকের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ পেয়েছি এবং আজ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। মোকসেদুর রহমানের বিরুদ্ধে আসা সকল অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। এবং দোষী সাব্যস্ত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com