
মায়ের হক মহান আল্লাহর পরেই। তা মানবিক ও ধর্মীয় দায়িত্বের মধ্যেই অগ্রগণ্য। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বারবার এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মা সন্তানের জন্য শুধু জন্মদাতাই নয়, বরং তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে গাইড হিসেবে কাজ করেন।
তাদের খেদমত করা, তাদের প্রতি বিনম্র ও সম্মানসূচক আচরণ করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আদেশ। মহান আল্লাহ মায়ের অধিকারকে এমন উচ্চস্থানে রেখেছেন যে, তা তার নিজের ইবাদতের পরেই স্থান পেয়েছে।
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন,
আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো। (সুরা লুকমান, আয়াত : ১৪)
উত্তম ব্যবহারের সবচেয়ে বেশি হকদার কে? রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম তিনবার মায়ের কথা বলেছেন। আর একবার বাবার কথা বললেন। (মুসলিম ২৫৪৮) হে আল্লাহর রসুল! আমার সম্পদ আছে, আমার সন্তান ও আছে, আমার পিতা ও আছে। আমার পিতা আমার সম্পদের মুখাপেক্ষী, এখন আমার করণীয় কী? রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম বললেন, তুমি ও তোমার সম্পদ তোমার পিতার। (ইবনে মাজাহ: ১৮৭০)
মা-বাবার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি আর পিতামাতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি। (তিরমিজি) রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম বলেছেন- মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। তারাই তোমার জান্নাত আর তারাই তোমার জাহান্নাম। (তিরমিজি)
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম বলেছেন-
যে ব্যক্তি তার বাবা-মা উভয়কে অথবা একজনকে বার্ধক্যে উপনীত অবস্থায় পেল কিন্তু তাদের খেদমত করে জান্নাতের পথ সুগম করতে পারলো না। (মুসলিম: ২৫৫১)
বাবা-মা যদি পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। তবে তাদের জন্য দোয়া করতে হবে, কবর জিয়ারত করতে হবে, তাদের আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। (আবু দাউদ: ৫১৪২)
একবার মুয়াবিয়া ইবনে জাহিমাহ আস-সুলামি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম-এর খেদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলেন,
হে আল্লাহর রসুল! আমি যুদ্ধে যেতে চাই। আর এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কামনা করছি। উত্তরে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম বলেন, তোমার মা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআল্লাম বললেন, তাহলে তার খিদমতে লেগে থাক। কেননা (তোমার) জান্নাত তার দুপায়ের নিচে (নাসাঈ: ৩১০৪)
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর