
বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকায় সিঁধ কেটে বিধবা এক নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা হত্যার পর ঘরের মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে স্বজনদের দাবি জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত নাসিমা বেগম (৫৫) ওই এলাকার বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে একা বসবাস করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নাসিমা বেগম এর স্বামী আব্দুল হাই মারা গেছেন ২০ বছর আগে। তার তিন মেয়ে খুলনায় বসবাস করেন। তিনিও খুলনায় বসবাস করতেন গত ৫/৬ বছর আগে তিনি কাজিরাবাদ এলাকার বাবার বাড়িতে একা থাকা শুরু করেন। বুধবার (২০ নভেম্বর) দিবাগত রাতে নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলেন নাসিমা বেগম। প্রতিবেশীরা সকালে ঘরের সিঁধ কাটা অবস্থায় দেখতে পান। পরে কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় প্রতিবেশীরা তার ঘরে যান এবং ভেতরে নাসিমা বেগমের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।
প্রতিবেশী মমতাজ বলেন, আমার ডায়াবেটিস তাই প্রতিদিন সকালে আমি হাঁটতে বের হই। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে দেখি ঘরের পিছনে সিঁধ কাটা। এরপর আমি ডাক চিৎকার দিলে সবাই আসে কিন্তু নাসিমা আপা সারা শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকেও তাকে পাইনি। পরে দেখি বিছানার উপরে কম্বল স্তূপ করা স্তূপ সারানোর পর তার মুখ দেখতে পেয়ে আমরা পুলিশকে খবর দেই।
নিহতের ফুপাতো ভাই শাহজাহান বলেন, ঘটনা শুনে আমরা বাড়িতে এসে দেখলাম সিঁধ কেটে আমার বোন কে হত্যা করা হয়েছে। যদি এটি চুরির জন্যেই হতো তবে আমার বোন কে আহত করতে পারতো। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আগেই থেকেই জমি নিয়ে তার চাচাদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল৷ সামান্য চুরির ঘটনায় মানুষ মেরে ফেলতে পারে এটা আমি বিশ্বাস করিনা। আর আজকে ঘটনার রাতে তার প্রতিবেশী আত্মীয়দের ঘরে কোন পুরুষ ছিল না সবাই নাকি বেড়াতে গেছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে এই হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আবদুল হালিম বলেন, গতরাতে নাসিমা বেগম নামের এক মহিলাকে সিঁধ কেটে ঢুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং ওনার গায়ে স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। যেহেতু তিনি একা থাকতেন এবং নিকট আত্মীয়রা এখনো এসে পৌঁছাননি তাই এখান থেকে আর কি নিয়েছে তা এখনো বলতে পারছি না। আমরা ক্রাইম সিন টিম খবর দিয়েছি। এখানে যদি আরো কিছু ফরেনসিক আলামত পাওয়া যায় তার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। ক্রাইম সিমের কাজ শেষ হলে আমরা মরদেহ পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠাবো। পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হলে বোঝা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কি। এটা হত্যাকাণ্ড না অন্য কিছু। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান আছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর