• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫৪ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:৩৭ সকাল
bd24live style=

মায়ের জন্যে পাকা বাড়ি বানানো হলো না শহীদ মাহাবুবের

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে ৪ আগস্ট সংঘাত-সংঘর্ষের কারণে রণক্ষেত্রে রূপ নেয় শেরপুর জেলা শহর। পুলিশের পাশাপাশি মাঠে ছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ সংগঠনটির অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এদিন দুপুরে হঠাৎ করে শহরে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও আন্দোলনরত ছাত্রদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। সে সময় পুলিশের অবস্থান ছিল খরমপুর মোড় ও ছাত্রদের অবস্থান ছিল খাদ্য গুদাম মোড়ে। এমন সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ছাত্রদের মিছিলের দিকে এগিয়ে কলেজ মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়। ছাত্ররা পিকআপ ভ্যানটিকে অনুসরণ করে দৌড়াতে থাকে। ঠিক তখনি জেলা প্রশাসনের একটি দ্রুতগামী সাদা গাড়ি ছাত্রদের মিছিল ভেদ করে পার হয়ে যায়। সেই গাড়ির চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান মাহবুব।

সেই থেকে মাহাবুবের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সন্তান হারানোর বেদনায় আহাজারি থামছে না পরিবারের সদস্যদের।

শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের তারাগড় কান্দাপাড়া গ্রামের মিরাজ আলী(৫০) ও মাহফুজা খাতুন (৪৫) দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে মাহবুব আলম (২০)। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে মাহবুব ছিলেন চতুর্থ সন্তান। মাহবুবের বাবা মিরাজ আলী একজন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী। তার মা মাহফুজা একজন গৃহিণী। আট শতাংশ জমির বসতভিটা ছাড়া তার বাবার আর কোনো ফসলি জমি নেই। বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ছেলে মাহবুব ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

মাহবুবের বড় ভাই মাসুদ (২৫) জানান, তার ভাই শেরপুর সরকারি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে অধ্যায়নরত ছিল। সে ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার চালনায় পারদর্শী ছিল। তাই সে জেলা শহরে আইটি ল্যাব নামে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষকের কাজ করতো। একজন সফল আইসিটি উদ্যোক্তার পাশাপাশি মাহবুব বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রোভার স্কাউটের সঙ্গে যুক্ত ছিল। গ্রামে কারও রক্তের প্রয়োজন হলে সে নিজে বন্ধুদের কাছে ফোন করে রক্ত সংগ্রহ করে দিত।

মাসুদ বলেন, মাহবুবের ইচ্ছে ছিল সে একজন বড় আইসিটি উদ্যোক্তা হবে। বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আনবে। কিন্তু ৪ আগস্ট প্রশাসনের গাড়ি চাপায় আমার ভাইয়ের মৃত্যুতে তার সব স্বপ্ন মাটির সাথে মিশে গেলো।

মাহবুবের প্রতিবেশী আব্দুল হামিদ (৫৫) বলেন, পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে মাহবুবই সবসময় নিজ পরিবারের জন্য ভাবতো। কিভাবে পরিবারের সদস্যদের ভাল রাখা যায় সেই চিন্তা করত। মাহবুবের কারণে গ্রামের অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সে অত্যন্ত বিনয়ী এবং ভদ্র ছেলে ছিল।

আরেক প্রতিবেশী আওলিয়া আক্তার (৩৫) জানান, মাহবুব একজন মানবিক মানুষ ছিল। সে মানবিক সংস্থা রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল। করোনা মহামারীর সময়ে মাহবুব গ্রামের হতদরিদ্রদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছিল। সে তথ্য প্রযুক্তিতে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করা ‘হার পাওয়ার’ প্রজেক্টের সমন্বয়ক ছিল। তার মাধ্যমে অনেক অসহায় মেধাবী নারী কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে সম্মানী ভাতা ও বিনামূল্যে ল্যাপটপ পেয়েছে।

মাহবুবের মা মাহফুজা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে মৃত্যুর আগে বলেছিল, মা তোমাকে আর হাঁস, মুরগী ও গরু পালন করে কষ্ট করতে হবে না। এখন আমার টাকায় সংসার চলবে। আমাদের টিনের ঘর। বর্ষাকালে ঝড়, বৃষ্টিতে ঘরে পানি পড়ে। সে আমাকে পাকা নতুন ঘর তৈরি করে দেবে বলে পাঁচ হাজার ইট কিনেছিল। কিন্তু তার মনের আশা আর পূরণ হলো না। আমাদের সংসারের খরচ এখন কে চালাবে? কে দেবে ছোট বোনের পড়ালেখার খরচ? আমার স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ছেলের জানাজায় শরিক হননি। এর থেকে কষ্টের আর কি থাকতে পারে। আমার ছেলে তো কোনো অপরাধ করে নাই। কেন তারে গাড়ি চাপা দিয়ে মারা হলো। আমি আমার প্রাণের টুকরা ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী বাসস’কে জানান, আমি কয়েকবার মাহবুবের বাড়িতে গিয়েছি। তার পরিবারের কষ্টের কথা শুনেছি। আমি তাদের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি কথা দিয়েছি পরিবারের সদস্যদের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করব। এছাড়া মাহবুবের ছোট বোন মাবিয়ার লেখাপড়ার সকল খরচ আমি ব্যক্তিগতভাবে বহন করব।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com