নির্বাচন ব্যবস্থ সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন,স্থানীয় নির্বাচনে যদি পার্লামেন্টারি সিস্টেম নিয়ে আসি। তাহলে ইউনিয়ন, পৌরসভা বা সিটি করপোরেষন যদি একই সিস্টেমর করতে পারব।
বর্তমানে যা আছে তা দিয়ে যদি স্থানীয় নির্বাচন করতে চান, তাহলে পাঁচটা আইন দিয়ে পাঁচটা নির্বাচন করতে হবে। এতে জাতীয নির্বাচনের আগে তা করা সম্ভব কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার(২৩ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে গণমাধ্যম সম্পাদকদের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিক নানা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন,আমরা যে মতবিনিময় করেছি নাগরিক সমাজের সেখানে সকলের অভিমত হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত। কারণ স্থানীয় নির্বাচন করার কারণে আমাদের কমিশনের সক্ষমতা বাড়বে। টেস্ট হয়ে যাবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে যে সাপোর্ট দরকার হবে, তা নিশ্চিত হয়ে যাবে।
তিনি বলেন,আমার প্রশ্ন হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন একটা, আর স্থানীয় নির্বাচন পাঁচটা। পাঁচটার মধ্যে তিনটা নির্বাচন- ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং উপজেলা জাতীয় নির্বাচন ন্যাশওয়াইড হয়। আর সিটি হয়তো লোকালাইজড। আর জেলা পরিষদ আসলে কোনো নির্বাচনই নয়। এখন নির্বাচনের পূর্বে যদি নির্বাচনে যাই, তাহলে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে তা ঝুলে যাবে। কারণ এখন আমাদের যে চিন্ত ভাবনা স্থানীয় নির্বাচন যেটা আছে সেটা কোনো সিস্টেম না৷ আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান, আলাদা আলাদা আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। কোনো কমপ্রিহেন্সিভ সিস্টেম নাই। এই সংস্কারের বড় কাজ হবে একটা সিস্টেম ডেভেলপ করে দেওয়া।
নতুন সিস্টেমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,এখন সিস্টেম কী হবে, যে সিস্টেম আছে সেটা আইয়্যূব খানের ভাবনায় রেখে করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ১০ বছর পরে উপজেলা, তার ১০ বছর পর উপজেলা পরিষদ হয়েছে। এতে করে কম্প্রিজেন্সিভ কিছু হয় নাই। এই সিস্টেম করার জন্য এখন মোক্ষম সময়। কেননা, বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার কিন্তু নাই। কেবল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) আছে। কাজেই ছবি আঁকার এটাই সময়।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন,আমরা যদি সিস্টেম করতে পারি যে, একটা কম্প্রিহেন্সিভ আইন হবে। সেই আইনের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠান চলে আসবে। এতে একটা তফসিল দিয়ে সবগুলো নির্বাচন করতে পারবো৷ আগে যেমন মেয়র নির্বাচন করেছি, সিটি নির্বাচন বলছি না। সব আলো পড়ছে মেয়রের ওপর। অন্য স্থানীয় সরকারেও একই অবস্থা। স্থানীয় সরকার যেখানে সফল, ভারতের পশ্চিম বঙ্গেও সরাসরি মেয়র, চেয়ারম্যান নির্বাচন হয় না। কাউন্সিলর ও মেম্বার নির্বাচিত হয়। তারা পরিষদে গিয়ে নির্বাহী কমিটি তৈরি করে৷ আমরা তেমন সিস্টেম তৈরি করতে চাই। তাহলে নির্বাচনটা অনেক লেস এক্সপেন্সিভ হবে। অনেক ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী হবে। এতো লোকবল লাগবে না।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,একটা হিসাব করে আমি দেখেছি গত কমিশন যে স্থানীয় নির্বাচন করেছে এতে ২৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১৯ থেকে ২০ লাখ লোক লেগেছে৷ ২২৫ দিনের মতো সময় লেগেছে। তাই স্থানীয় নির্বাচনে যদি পার্লামেন্টারি সিস্টেম নিয়ে আসি। তাহলে ইউনিয়ন, পৌরসভা বা সিটি করপোরেষন যদি একই সিস্টেমর করতে পারব তাহলে খরচ চলে আসবে ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে। লোক লাগবে আট লাখ। সময লাগবে ৪৫ দিন। তাহলে এই সিস্টেমে যাওয়ার জন্য অধ্যাদশ করে যদি যান তাহলে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব। অথবা বর্তমানে যা আছে তা দিয়ে যদি স্থানীয় নির্বাচন করতে চান, তাহলে পাঁচটা আইন দিয়ে পাঁচটা নির্বাচন করতে হবে। এতে জাতীয নির্বাচনের আগে তা করা সম্ভব কি-না, তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ