নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মোকলেছুর রহমান বিমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুই শত পঞ্চাশ জনকে আসামী করা হয়েছে। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম।
পুলিশ সূত্র জানায়, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে রণচণ্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মোকলেছুর রহমান বিমান বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে পুলিশ খবর পায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ খবর পেয়ে পুলিশ রণচণ্ডী অবিলের বাজারে অভিযান চালিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মোখলেছুর রহমান বিমানকে গ্রেফতার করে। তাকে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে আসার সময় আসামীরা দলবেঁধে ওই চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা বিমানকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় আসামীরা মাইক্রোবাসে ইটপাটকেল ছুঁড়ে হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ বাঁধা দিলে তারা পুলিশের উপর অতর্কিতে হামলা করে। এতে চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতরা হল- এসআই আমিনুল, কনস্টেবল মনজুরুল, শরীফ ও সাজ্জাদ। এ খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং গ্রেফতারকৃত বিমানকে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে ওই দিন রাতে আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা, গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মমিনুর নামে অপর এক আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জহরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে। এতে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুই শত পঞ্চাশ জনকে আসামী করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার আসামিরা হল- রনচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক উত্তর বাফলা গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে মোকলেছুর রহমান বিমান (৪০)। রনচন্ডী বাজারপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মমিনুর রহমান (৪০), রনচন্ডী উত্তরপাড়ার গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম (২৫), রনচন্ডী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমান (৪৫), রনচন্ডী বাজারপাড়া গ্রামের বিশাদুর ছেলে লাভলু হোসেন মেম্বার ওরফে কলাই লাভলু (৪৮), একই গ্রামের বাবু মিয়া, বাফলা গ্রামের মৃত মফেল উদ্দিনের ছেলে হাবিব ইসলাম (৪২), সোনাকুড়ি গ্রামের কেড়ি মিয়ার ছেলে শিজু (৪০), রনচন্ডী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে ফারজু (২৫), রনচন্ডী উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত কুদ্দুসের ছেলে সাহেব আলী (২৫), বাফলা মাছুয়া পাড়া গ্রামের আফসার আলী বাদল (৬০) প্রমুখ।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, যুবলীগ নেতা মোখলেছুর রহমান বিমানকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসার সময় যুবলীগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ও তার সমর্থকরা ইট পাটকেল দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে যুবলীগ নেতা বিমানকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ সদস্যরা বাঁধা দিলে তাঁদের উপরও হামলা করে তারা। এতে চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর