
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ‘জিওগ্রাফী অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ বিভাগের বর্তমান নাম নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। বিভাগের ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বর্তমান নাম বহাল রাখার পক্ষে থাকলেও ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা নাম পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। তারা বিভাগের বর্তমান নাম পাল্টে ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামকরণের দাবি জানিয়েছেন।
এই দাবিতে রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ২টায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনদিনের মধ্যে দাবি আদায়ের আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আধা ঘণ্টা পর বেলা আড়াইটায় প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে ফটক ছাড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলার সভাকক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন উপাচার্য।
জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি’ নামে বিভাগটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তির পর ২০২১ সালে ওই তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘জিওগ্রাফী অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ করা হয়। তবে বর্তমানে আবারও দ্বিতীয় দফায় বিভাগের নাম পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করছেন বিভাগটির ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মতামত না নিয়েই সেসময় তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বিভাগ থেকে প্রশাসন বরাবর আবেদন দিয়ে নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে বর্তমান নাম পরিবর্তনের বিপক্ষের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, নাম পরিবর্তনের পক্ষের শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সেসময় বিভাগের সদ্য সাবেক সভাপতি ইনজামুল হক স্যার প্রত্যেকটি শিক্ষাবের্ষর শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের মতামত ও স্বাক্ষর নিয়েছেন। এমনকি তিনি বারবার ক্রস-চেকও করেছেন। এর প্রেক্ষিতে তখন সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হয়। তাই বর্তমান নাম বহাল রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিভাগের সদ্য সাবেক সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ইনজামুল হক বলেন, বিভাগে মোট দুইটি আন্দোলন চলছে। একটি শান্তিপূর্ণ অপরটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিভাগের প্রথম দুইটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বর্তমান নাম পরিবর্তন না করার দাবিতে বিভাগে আবেদন দিয়েছে। আর অন্যপক্ষ কারো ইন্ধনে বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করছে। প্রথমবার নাম পরিবর্তনের সময় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছিল। তখন আমরা যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এর সমস্ত ডকুমেন্টস আমাদের কাছে রয়েছে। তাদের নাম পরিবর্তনের এই দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
বিভাগের বর্তমান সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায়কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, আমি আমার কলিগদের নিয়ে উপাচার্যের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, সব শিক্ষার্থীই যদি বিভাগের নাম পরিবর্তন চায় তাহলে উপাচার্যের সেখানে বাধা দেওয়ার নৈতিক এবং আইনগত অধিকার নেই। তবে সেটা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে হতে হবে। দাবি আদায়ের জন্য কোনো মাইক ব্যবহার ও মিছিল করা প্রয়োজন নেই।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর