সাভারের আশুলিয়ায় পাওনা টাকা চাওয়ায় মাকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে সৎ ছেলে জাহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীর। পাওনা টাকার জন্য গ্রাম্য সালিশে ন্যায্য কথা বলায় মাসুদ রানা (৩৯) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে লীলা ফুলা জখম করার এয়োও অভিযোগ জাহিদ ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৬ শে নভেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এইসব বিষয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সালমা ও মাসুদ রানা। এরআগে শনিবার (২৩ শে নভেম্বর) সকালে আশুলিয়ার ইউসূফ মার্কেট ধনাইদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলো, ঢাকা জেলার আশুলিয়ার ইউসুফ মার্কেট ধনাইদ এলাকার গেদাব আলী মণ্ডলের দুই ছেলে মো: জাহিদুল ইসলাম (৩৫) ও মোঃ রাশেদ ইসলাাম (২২)। অন্যজন হলো জাহিদের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (২৫)।
ভুক্তভোগীরা হলো, একই এলাকার গেতাব আলী মণ্ডলের তৃতীয় স্ত্রী সালমা বেগম (৩০) ও অপরজন একই এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে মোঃ মাসুদ রানা (৩৯)।
ভুক্তভোগী সালমা বেগম বলেন, জমি বিক্রির পাওনা টাকা চাইতে গেলে আমার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর ছেলে জাহিদুল বিভিন্ন সময় আমার ও আমার স্বামীকে মারধর সহ ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করে আসছিলো। ২১ শে নভেম্বর পাওনা টাকার জন্য গ্রাম্য সালিশী বসে। সালিশে আমার স্বামীর ভাইচতা মাসুদ রানা সত্য কথা বলায় পিটিয়ে তার বাম পা জখম করে দেয়। এর পরে জাহিদ তারা নিজেরাই তাদের বাড়ি ঘরের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ভাঙচুর করে উলটো আমাদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দেয়। ২৩ শে নভেম্বর জাহিদ ও তার লোকজন দিনের বেলায় আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার মাথায় দাও দিয়ে কোপ দেয়। পরে আমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এঘটনায় আমার মাথায় ৩টি সেলাই লাগে।
এরপরে কোন উপায় না পেয়ে আমি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। দারোগা জাহিদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে ছেড়ে দেয়। কেন এবং কীসের জন্য তাকে ছাড়া হলো এটা বুঝতে পারছি না। জাহিদকে যেন আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা হয় এজন্য আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
অন্য ভুক্তভোগী মাসুদ রানা বলেন, আমার দাদা গেদাব আলীর জায়গা জমি সক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে গত ২১ শে নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে স্থানীয় সালিশি বিচার বসে। আমি ন্যায্য কথা বলার কারণে জাহিদুল ও তার সহযোগীরা আমি সহ আমার দাদাকে এবং পরিবারের লোকজনদের উপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে। এরপরে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আমার বাম পা জখম করে। পরে এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় আমিও একটি অভিযোগ দায়ে করি।
অভিযুক্ত জাহিদ এঘটনা অস্বীকার করে বলেন, সালিশীতে মাসুদ রানা আমার কথায় কাউন্টার দেয়। পরে আমি তাকে বলি শালিসির মধ্যে তুমি কাউন্টার দিচ্ছো কেন। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সে আমাকে কিলঘুষি দেয়। পরে আমিও তাকে কিলঘুষি দেই। একপর্যায়ে সে হোঁচট খেয়ে পড়ে পায়ে ব্যথা পায়। অন্যদিকে সালমা বেগম নিজের মাথায় রং মেখে ব্যান্ডেজ করে আমি নাকি তাকে মেরেছি এই বলে থানায় অভিযোগ করে। পরে আমাকে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়। এই ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় পরে দারোগা আমাকে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত জাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। পরে জিজ্ঞাসা করে ওসি স্যারের নির্দেশে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মা-ছেলের ঘটনায় দুইপক্ষে ডেকে মীমাংসা করা হবে। এসআই সাইফুল ও এসআই রাজ্জাককে সাথে নিয়ে এঘটনা মীমাংসা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর