বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা গণভবনের খাবার রেখে ভারতে পালিয়ে গিয়ে এখন সেখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশে অস্থিতিশীল তৈরি করতে হিন্দুদের নাম করে ছাত্রলীগ দিয়ে হামলা করছে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান আমাদের আমানত। বিএনপির কেউ তাদের নির্যাতন করে না এবং করতে পারবে না। এক্ষেত্রে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। হাসিনার সকল ষড়যন্ত্র কোনো ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেওয়া যাবে না।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে রায়গঞ্জ-তাড়াশ ও সলঙ্গা থানা বিএনপি এবং সব সহযোগী অঙ্গসংগঠন কর্তৃক আয়োজিত নিমগাছি ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। আমরা কিন্তু ক্ষমতায় আসি নাই, ক্ষমতায় অন্তবর্তীকালীন সরকার। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাই বিএনপির ক্ষমতায় আসার একমাত্র পথ হলো জনগণের ভোট। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে হেরে গিয়েছিল। কিন্তু দেশ থেকে পালায়নি। আর হাসিনা গণতন্ত্র হত্যা করেছে বলেও দেশ থেকে পালাতে হয়েছে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আজ থেকে দুই বছর আগে যখন আমি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করাচ্ছিলাম তখন শুনলাম খুনি হাসিনার আদালত আমাকে ৯ বছরের সাজা দিয়েছে। আমি তখনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তার রায় আমি মানি না। হাসিনার জেলে আমি যাব না। তাই জেলে যাওয়ার চেয়ে আমি বিদেশে থেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবো। আন্দোলন পরিচালনা করব এবং আমি তাই করেছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপরে নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু কোন নেতাকর্মীকে মাঠ থেকে সরাতে পারেনি। বরং কর্মী আরো বেড়েছে। পুরো বাংলাদেশ হাসিনা কয়েদি বানিয়েছিল। ১৬ বছর লড়াই করার পরে আজ আমরা একটা মুক্ত আকাশ দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, হাসিনার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে টুপ করে নদীতে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। আজকে আপনি কোথায়। যাদেরকে দেশ দিয়ে দিয়েছিলেন আজ তাদের কাছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ যদি আবু সাঈদ-মুগ্ধ, রঞ্জু, সুমন, লতিফ, আলীমসহ অন্যান্য শহীদদের রক্তে রাজপথ লাল না হতো তাহলে আজ এদিন দেখতে হতো না। আজ ১২ বছর পরে খালেদা জিয়া সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে গিয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনী তাকে প্রধানমন্ত্রীর মতো সম্মান দিয়েছে স্যালুটের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আমি ১৬ বছর আগে যে কর্মী দেখতাম এখন আরও নতুন নতুন কচি কচি মুখ দেখি। আমি ভেবেছিলাম আমাদের মনে হয় নতুন কর্মী নাই, কিন্তু অসংখ্য নতুন মুখ আমাদের কর্মী। এরাই একসময় দেশের হাল ধরবে। আওয়ামীলীগকে শায়েস্তা করবে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, একসময় জিয়াউর রহমান যেমন বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ঠিক তেমনই তারেক রহমানও দেশের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। একসময় তিনিই হবেন বাংলাদেশের পথ প্রদর্শক ও শান্তির বার্তাবাহক।
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ হলো সাপ। তাদের থেকে সাবধানে থাকতে হবে, তাদের সঙ্গে চলাফেরা চলবে না। তাদের সব হারাম, তাই তদের হারাম কেউ খাবেন না। তাদেরকে কেউ আশ্রয়-প্রশ্রয় দিবেন না। আমার কাছে সিরাজগঞ্জের নেতাকর্মীদের তালিকা রয়েছে। আপনারা সাবধান হয়ে যান।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদার, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রোমানা মাহমুদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, সলঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি মতিয়ার রহমান সরকার, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স.ম আফসার আলী, রায়গঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি হাতেম আলী সুজন, তাড়াশ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক তপন কুমার গোস্বামী, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ২নং সহ-সাধারণ সম্পাদক আ.হ.মো.খোকন প্রমুখ।
জনসভায় জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত অংশগ্রহণ করেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর