
চট্টগ্রামে তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে শোকসভা ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেসকে (ইসকন) জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এসময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতকে নাক না গলানোর আহ্বানও জানানো হয়।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ওই শোকসভা ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, যেকোন ধরনের উগ্রবাদই জঙ্গি। জঙ্গি লেবাস, বক্তব্যে হয় না; জঙ্গি হয় মননে, বিশ্বাস ও কর্মে। বাংলাদেশে যারাই উগ্রবাদী করবে তারাই জঙ্গি। আমাদের দেশে উগ্রবাদী হাতে প্রথম নিহত হলেন আলিফ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন। যদি জনগণের দায়িত্ব পালন না করতে পারেন আপনাদের কেউ প্রতিটি কাজের জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভারতের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে কিন্তু একমাত্র বিজেপি সরকার শেখ হাসিনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ষড়যন্ত্র করে চলছে। ভারতকে বলতে চাই, আপনারা আপনাদের গদি বাঁচান; বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর দরকার নাই।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদ বলেছেন, ইস্কন ইহুদিবাদের আদর্শকে ধারণ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর প্রতিষ্ঠার পর ভারতে সনাতন ধর্মাবলম্বী গুরুরা তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল এবং প্রতিষ্ঠাকে ভারত প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এদের উদ্দেশ্যই দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। ইস্কন মানেই সনাতনী নয়, তার প্রমাণ পুরান ঢাকার স্বামীভাগের সনাতনীদের মন্দির দখল করে নিয়েছে ইস্কন , সিলেটে রথ যাত্রায় হামলা করেছে, বিভিন্ন এলাকায় সনাতনীর জমি দখল করে নিয়েছে তারা। আপনারা সকল মিডিয়া ইস্কনের প্রোগ্রামকে সনাতনীদের প্রোগ্রাম বলে প্রচার করেছেন। আপনারা কী মনে করেন ইস্কন মানেই সনাতনী? তাহলে হাজার হাজার সনাতনী ভাই-বোনেরা যারা ইস্কনের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে তারা কারা!
তিনি আরও বলেন,বাংলাদেশের মাটিতে বসে দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। ইস্কনকে একটি শুধু কড়া সনাতনী সংগঠন হিসেবে প্রচার করার কারণেই আজকে এই পরিস্থিতি। ইস্কন তার শুরু থেকেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, সরকার এখনো জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করেনি,বিচার শুরু করেনি। গ্রেফতার করলে আজকে চট্টগ্রামে নাসিরের লোকজন ইস্কনের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করতে পারত না।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহিন সরকার, সিনথিয়া জারিন আয়েশা, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’,‘ ইস্কন তুই জঙ্গি-স্বৈরাচারের সঙ্গী’, ‘আপোস না সংগ্রাম- সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘জঙ্গিবাদের কালোহাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়। সমাবেশ শেষে আইনজীবী আলিফের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও সম্প্রীতি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর