
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিকতার আবেদনে জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে নোটিশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ওই নোটিশে ওই হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেখ এ. বি. এম. জাকির হোসেন নিজে স্বাক্ষর করেছেন। তবে তার দাবি পূর্বের নোটিশ থেকে কপি পেস্ট করতে গিয়ে এমন ভুল হয়েছে।
নোটিশ সূত্রে, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আবাসিকতার আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। ফরম বাবদ দুইশ টাকা হলের ৬১৪ নং অ্যাকাউন্ট নম্বরে জমা দিয়ে ফরম সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরণ করে হল অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই নোটিশে বোল্ট অক্ষরে 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র- আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হল প্রভোস্ট স্বাক্ষরিত এই নোটিশের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তাকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলছেন, যে বৈষম্য দূর করার জন্য এতো আন্দোলন সেই বৈষম্য যদি আবারও গেড়ে বসে তাহলে নতুন স্বাধীনতার মানে কি? শাহরিয়ার জামান বিয়াদ নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, কোটা থাকবে না বলে আন্দোলন হলো, আর এখন এই নোটিশের মানে কি? অনতিবিলম্বে এই নোটিশ প্রত্যাহার করতে হবে। এই বৈষম্যমূলক নোটিশ প্রত্যাহার করে স্বচ্ছভাবে আবাসিকতা প্রদান করতে হবে। নাহলে এর বিরুদ্ধে আমরা আবারও আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এরকম কোনো বৈষম্যমূলক দাবি আমরা কখনোই করতে পারি না। প্রভোস্ট স্বপ্রণোদিত হয়েই এটা করেছেন। আমরা তাকে বিষয়টি অবগত করেছি এবং আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি।
এ বিষয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেখ এ. বি. এম. জাকির হোসেন বলেন, প্রভোস্ট কাউন্সিল থেকে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও এমন কোনো সুবিধা চাওয়া হয়নি। পূর্বের নোটিশ থেকে কপি পেস্ট করতে গিয়ে ভুল হয়েছে। সংশোধিত নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সমালোচিত নোটিশটির 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে' লাইনটির উপর আলাদা কাগজ দিয়ে ফটোকপি করে সেটাকে জোড়াতালি দিয়ে 'সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি' হিসেবে সাটানো হয়েছে। এমনকি সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে পুরোনো বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তির একই তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
প্রভোস্ট কাউন্সিল সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের প্রভোস্ট কাউন্সিল থেকে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি ভুল করে এটা করেছেন। অতিদ্রুত সংশোধিত নোটিশ দিয়ে দিবে। হলের সিট বণ্টন হবে মেধার ভিত্তিতে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর