নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব বাংলাদেশের বাজার। এসব পলিথিনের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, ফলে দূষণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। এতে দেশের নারী-শিশুসহ সব বয়সের মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে এবং পরিবেশের ক্ষতিও বাড়ছে।
পরিত্যক্ত পলিথিন ক্ষুদ্র মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়, যা বাতাস, পানি এবং খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। এর ফলে ফুসফুস, কিডনি এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের গুরুতর ক্ষতি হতে পারে।
পলিথিন তৈরির উপকরণ যেমন বিসফেনল এ (বিপিএ) এবং ফ্যালেটস, মানবদেহে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, প্রজনন সমস্যা, শ্বাসকষ্ট এবং ক্যানসারের মতো গুরুতর রোগ সৃষ্টি করতে পারে। পলিথিন পোড়ানোর ফলে নির্গত ডাইঅক্সিন ও ফুরান বায়ুদূষণ ঘটায়, যা শ্বাসতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়।
এ পলিথিন শুধু মানুষের জন্য নয়, প্রাণীকূলের জন্যও বিপজ্জনক। উভচর প্রাণীদের পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে, যার ফলে অপুষ্টি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। সামুদ্রিক কচ্ছপ, মাছ এবং অন্যান্য প্রাণী ভাসমান প্লাস্টিককে খাদ্য ভেবে খেয়ে ফেলে, যা তাদের মৃত্যুর কারণ হয়।
পলিথিনের বর্জ্য সাগরের প্রবাল প্রাচীর ঢেকে দেয়, ফলে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ ধরনের দূষণ সামগ্রিক পরিবেশে গভীর সংকট সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশে পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও কার্যকরী নিয়ন্ত্রণের অভাবে এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অক্ষমতা ও দুর্বল পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। যদি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে দেশ ভয়াবহ সংকটের সম্মুখীন হবে।
সকলের উচিত পলিথিন বর্জন করে পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহার করা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতন হওয়া।
সর্বশেষ খবর