বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, "বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের ওপর জুলুম, অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছিল। জামায়াতে ইসলামী ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুমের প্রধান টার্গেট।"
তিনি বলেন, "জামায়াতের অনেক নেতাকে জুডিশিয়াল ক্যু’র মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে, এর মধ্যে ফরিদপুরের দুই সন্তান, তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।"
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান আরো বলেন, "২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয় এবং ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়।"
তিনি বলেন, "আগামীতে জামায়াত ক্ষমতায় এলে এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার করা হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশকে ন্যায়বিচার ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।"
এজন্য, তিনি নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে গিয়ে ইসলামী শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করার আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "৫ আগস্টের জনতার বিপ্লবে শহীদ হওয়া প্রতিটি নাগরিককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি এবং তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। চিরকাল এই দেশের ছাত্রসমাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন করতে চাই, যাতে ছাত্ররা শিক্ষাজীবন শেষে বেকার না থাকে।"
দেশের নারী সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আমাদের বিরুদ্ধে কিছু কুৎসা রটানো হয় যে, আমরা ক্ষমতায় গেলে দেশের মা-বোনদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখব। কিন্তু এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।"
বাংলাদেশকে একটি ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, "ফরিদপুরের মাটিকে জামায়াতে ইসলামী এর দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।"
তিনি আরো বলেন, "ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদ কোনো শক্তি যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।"
ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির মাওলানা মুহাম্মদ বদরুদ্দনী সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন – কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি ও ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক এ এইচ এম হামিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও অঞ্চল সহকারী পরিচালক দেলোয়ার হোসেন, মো. মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য শামসুল ইসলাম আল বরাটি, প্রফেসর আব্দুত তাওয়াব প্রমুখ।
এ সময় বক্তব্য দেন, মাদারীপুর জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. মোখলেচুর রহমান, গোপালগঞ্জের আমির মাওলানা মো. রেজাউল করীম, শরীয়তপুর জেলা আমির মাওলানা আব্দুর রব হাসেমী, রাজবাড়ী জেলা আমির অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলা জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মো. আবু হারিচ মোল্যা, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম আবুল বাশার, ফরিদপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মো. জসিম উদ্দীন, নগরকান্দা উপজেলা আমির মাওলানা মো. ছোহরাব হোসেন, বোয়ালমারী উপজেলা আমির মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম, ফরিদপুর পৌরসভার আমির এহসানুল মাহবুব রুবেল, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আব্দুল হামিদ ও পৌর ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. জিহাদুল সালাম রত্ন প্রমুখ।
এর আগে বেলা ১২টার পর বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সদস্যরা নসিমন, করিমন ও বাসযোগে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর