দায়িত্বশীল শিক্ষকদের সমন্বয়হীনতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বাজেট না থাকায় অনেকটা সংকটে চলছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ৩য় অন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতা'২০২৪। টুর্নামেন্ট সুষ্ঠভাবে আয়োজন ও পরিচালনার জন্য ১৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির দায়িত্ব পালন করছে মাত্র একজন। এ অবস্থায় টুর্নামেন্ট পরিচালনা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ফুটবল প্রতিযোগিতাকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে যেমন আনন্দ বিরাজ করছে ঠিক তেমনই উৎকণ্ঠাও বিরাজ করছে।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের এক শিক্ষার্থী জানায়, এ ধরনের টুর্নামেন্ট প্রতিবার শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগ পরিচালনা করে থাকে। প্রতিবছরের মতো এইবারও দায়সারা টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। এখন প্রতিটা স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বুট পরে খেলা হয়, আমাদের হয় না। খালি পায়ে খেলার ফলে খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে বেশি পড়তেছে। যে কারণে খেলার প্রতি অনেকেই অনীহা প্রকাশ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুটবল খেলোয়াড়েরা কঠোর পরিশ্রম করে অনুশীলন করে সেখানে নাস্তার জন্য কোনো বরাদ্দ থাকে না। অনুষদ থেকে নাম মাত্র বাজেট দিয়ে থাকে। বাজেট খুব স্বল্প হওয়ায় খেলার উপকরণে সংকট হয়।
প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, সাধারণত সব অনুষদের ফান্ডেই ভালো অঙ্কের ফি জমা থাকে। সেখান থেকেই স্টুডেন্টদের দাবি বা চাওয়ার ভিত্তিতে বিভিন্ন খাতে স্যাররা এই টাকাটা দেয়। এখন অনুষদ বলতেছে বাজেট নাই, শিক্ষকদের মূলত আগ্রহের অভাব। আবার টুর্নামেন্ট হবে কিন্তু জানানো হয় ৭ দিন আগে। এই ৭ দিনের মধ্যে কিভাবে টিম সিলেকশন করে খেলা হবে তা আপনিই বলেন।
বাজেটের বিষয়ে একাধিক অনুষদের ডিন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। অনুষদে বাজেট এমনিতেই স্বল্প থাকে তার মধ্যেই অনুষদের উন্নয়নসহ যাবতীয় কাজ পরিচালনা করতে হয়। যে কারণে খেলা পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের বরাদ্দ সীমিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যদি খেলোয়াড়দের জন্য কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হবে।
এদিকে খেলাকে কেন্দ্র করে মাঠ দখল এবং বিশৃঙ্খলা হয়ে টুর্নামেন্ট বন্ধের উপক্রম হয়েছিলো। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সহযোগিতায় টুর্নামেন্ট আবার পহেলা ডিসেম্বর শুরু হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মাহাবুব উল হাসান বলেন, ফুটবল বুটে খেলার বিষয়ে আমাকে কোনো শিক্ষার্থী জানায় নি। তাই এই বিষয়টা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় নি। তবে পরেরবার বুটে খেলার বিষয়ে আমি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আর খেলা পরিচালনার বিষয়ে ১৪ জনের কমিটি করে দেওয়া হলে খেলার মাঠে আমাকে একাই পরিচালনা করতে হচ্ছে। খেলার মাঠে শৃঙ্খলা সাথে খেলার সার্বিক দিক পরিচালনা করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী প্রক্টর ও আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল খেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক রাফিয়া আখতার বলেন, খেলা পরিচালনার বিষয়ে এখনো মিটিং হয়নি, আমরা তো অপেক্ষা করতেছি মিটিংয়ের কিভাবে খেলা পরিচালনা করা যায়। আর মিটিং ডাকলে তো আমরা আসবো। খেলা পরিচালনার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল শিক্ষক থাকা দরকার।
উল্লেখ্য, আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতা হাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা ২৪ নভেম্বর (রবিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ-০১ এ উদ্বোধন করেন। অনুষদ ভিত্তিক ৮ টি দল অংশগ্রহণ করবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর