
গার্মেন্টসের বায়ারের কাজে বন্ধুদের সাথে চায়না থেকে বাংলাদেশের গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় ঘুরতে আসেন চেংনাং নামে চায়নার এক যুবক। এসেই সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার অন্তরা খাতুন নামে এক সন্তান জননীর সাথে দেখা হয় এবং তার প্রেমে পড়ে যায়। এরপর দুজনের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পরে দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে ওই যুবক মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে প্রেমিকা অন্তরা খাতুনকে বিয়ে করেন। মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে নতুন নাম রেখেছেন সালমান স্বাধীন। বর্তমানে দুজন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পৌর এলাকার বিয়ারা গ্রামে অন্তরার বাড়ীতে বসবাস করছে। ভিসা প্রসেসিং শেষে স্বামী-স্ত্রী দুইজনে চায়নার হুনান শহরে চলে যাবে। দুই দিন আগে নব দম্পতি গ্রামে আসলে অন্তরার স্বজনসহ দূরদূরান্তের মানুষ এসে বিদেশী জামাইকে দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।
অন্তরা খাতুন বলছেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা অবস্থায় চায়না থেকে কিছু বিদেশী বায়ারের সাথে চেং নাং কারখানায় ঘুরতে আসেন। তখন তাকে দেখে চেংনাংয়ের ভাল লাগে। এরপর দুজনের ফেসবুকে কথাবার্তা এবং মন দেয়া নেয়া হয়। তিন মাস প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের সম্মতিতে চেংনাং ইসলাম ধর্ম করে এবং সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখে দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি আরো বলেন, গত ৫ মাস আগে তার পূর্বের স্বামীর সাথে তার ডিভোর্স হয়েছে। ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে তার। তবে এসব বিষয় খুব সহজ ভাবেই মেনে নিয়েছে সালমান স্বাধীন ওরফে চেং নাং।
চীনের হুনান শহরের যুবক চেং নাং বলেন, অন্তরাকে প্রথম দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগে। পরে তার সাথে আমি যোগাযোগের মাধ্যম খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে অন্তরার ফেসবুক আইডি সংগ্রহ করে তাকে মেসেজ পাঠাই। সেই থেকে আমাদের সম্পর্কের শুরু। এরপর প্রেম এবং বিয়ে। অন্তরার অতীত নিয়ে আমার কোন ভাবনা নেই। এখন দুজন সারাজীবন একসাথে থাকব এটাই আমাদের পরিকল্পনা। ইতোমধ্যে ভিসার আবেদন করেছি। ভিসা পেলেই দুজন চীনে চলে যাবে।
অন্তরার বাবা আব্দুর রশিদ ও মা রাহেলা খাতুন জানান, প্রথমে একটু চিন্তা হয়েছিল। ভিনদেশি একজনের সাথে আমাদের মেয়ে কিভাবে সংসার করবে। তবে ধীরে ধীরে একে অপরকে জানতে ও বুঝতে শিখেছে। তাদের মধ্যে একটি নিবিড় বন্ধনের সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য আমরাও তাকে মেয়ের জামাতা হিসেবে মেনে নিয়েছি। অভিভাবক হিসেবে আমরা খুশি হয়ে দোয়া করি তারা যেন সারাজীবন সুখে থাকে।
আর গ্রামবাসী বলছেন, কাজিপুর উপজেলায় চায়না আসা এক যুবক আমাদের গ্রামের মেয়েকে মেয়ে করেছে জানতে পেরে আমরা খুশি। ইন্টারনেটের আধুনিক যুগে এ ধরনের সম্পর্ক স্বাভাবিক। এতে চীনের সাথে আমাদের কাজিপুরের একটা ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠলো। আমরা এলাকাবাসী দুজনকেই দোয়া করি তারা যেন সবসময় ভাল থাকেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর