শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর বাঁধায় বালু মহলের ইজারাদারের সংবাদ সম্মেলন পন্ড হয়ে গেছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের উত্তর গড়কান্দা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ভোগাই নদীর ইজারাদার জিলানী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কাদির জিলানী নালিতাবাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনের জন্য জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের তার নিজ বাস ভবনে ডাকেন। সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিসুর রহমান ও ইউএনও মো. মাসুদ রানা স্ব-শরীরে পুলিশ বাহিনী নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের স্থানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সামনে থেকে সম্মেলনের আহ্বানকারী বালু ব্যবসায়ী ও ইজারাদার জিলানী এবং অপর ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদকে সংবাদ সম্মেলন করার অপরাধে আটক করতে আসেন। এসময় সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে কোন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কিনা সেটি জানতে চাইলে ইউএনও বিষয়টি পরে জানানো হবে সাংবাদিকদের জানান। পরে এক পর্যায়ে তাদেরকে রেখে যান।
ওই সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার আব্দুল কাদির জিলানী তার লিখিত বক্তব্যে জানান, তিনি চলতি ১৪৩১ বাংলা সালের জন্য উপজেলার ভোগাই নদীর কালাকুমা, হাতিপাগার, নয়াবিল, ফুলপুর ও মন্ডলীয়াপাড়া মৌজার মোট ৯.৮২ একর বালু মহাল ভ্যাট ও আইটিসহ ১ কোটি ২১ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা নানা অজুহাতে নিজে লাভবান হওয়ার জন্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওই মহালে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বালু উত্তোলনে বাঁধা সৃষ্টি করেন। এতে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়া নিলামে আটককৃত বালু অনিয়মের মাধ্যমে ৬ কোটি টাকার বালু মাত্র ৯৪ লাখ টাকা বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করে নিজে লাভবান হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। এছাড়া তারই অলিখিত নির্দেশে ইজারাকৃত জায়গার বাইরে নিলাম গ্রহিতারা অবৈধভাবে মিনি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেন।
এদিকে, ইজারাদার আব্দুল কাদির জিলানীর সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ইউএনও কর্তৃক মিথ্যা মামলা ও মোবাইল কোর্টে হয়রানিসহ নানা অভিযোগে তাকে হেনস্তা করার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এই আশঙ্কা প্রকাশ করার পরপরই ইউএনও ও এসিল্যান্ড পুলিশ নিয়ে তার বাড়ির আঙ্গিনায় সংবাদ সম্মেলনস্থলে হাজির হন। এসময় তিনি সংবাদ সম্মেলনকারী আব্দুল কাদির জিলানী ও হারুন অর রশীদকে উঠিয়ে আনতে চেষ্টা করলে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের মুখে তাকে রেখে যান।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি আরো বলেন, ভোগাই নদীর ইজারাকৃত স্থানে ইজারার শর্ত মেনে বালু উত্তোলন করতে কোন প্রকার বাঁধা দেওয়া হয় না। তবে ইজারা বহির্ভূত স্থান থেকে গভীর গর্ত করে ও নদীতীর ভেঙে বালু উত্তোলন করা হলে সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এমনকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, কিছু বিপথগামী লোকজনের অসহযোগিতার কারণে সরকারি সম্পদ রক্ষা করতে তাদেরকে বেগ পেতে হচ্ছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর