ভারত বাদে বিকল্প বন্ধুরাষ্ট্র খুঁজতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার। সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ চত্বরে গণজমায়েতে তিনি এ আহ্বান জানান।
মুফতি হারুন ইজহার বলেন, বাংলাদেশকে ভারত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন রাষ্ট্র মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারতীয় আধিপত্যের জাল ছিন্ন করেছে। বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করবো আপনারা বিকল্প বন্ধুরাষ্ট্র খুঁজুন। আমরা পাকিস্তানের কথা বলছি না। আমরা পাকিস্তানের টাকা নেই না। পাকিস্তানের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং দক্ষিণ এশিয়ায় চীন রয়েছে। আরও অন্যদেশ রয়েছে। সেসব দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক করুন। তুরস্ক আছে মালয়েশিয়া আছে। আগ্রাসী ভারতের তুলনায় পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সম্পর্ক করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনকে হুঁশিয়ার করে হারুন ইজহার বলেন, আপনি আপনাদের দেশের সরকারের সকল রাজনীতিবিদের মুখে লাগাম লাগান। আমাদের জানা আছে আপনার দেশের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার সামরিক হামলার পরিকল্পনা আছে। ভারতকে বলে দিতে চাই ১৭ বছর হাসিনা চাপিয়ে দিয়েছেন আর কোনো দালালকে আমরা মেনে নিবো না।
যুগ্ম মহাসচিব মুফতি হারুন ইজহার বলেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আলেম-ওলামারা যেভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তা ইতিহাসে বিরল। আমাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করেছে। অবাক হয়েছি, রিমান্ডে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও দূতাবাসের লোকজনও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
মুফতি হারুন ইজহার বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে শুধু ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়নি, এর পিছনে মূল চালিকাশক্তি ছিল হিন্দুস্থানি আধিপত্যবাদ। তারা দেশের প্রত্যেকটা সেক্টরকে ধ্বংস করেছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনও ভারতে বসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। প্রতিবিপ্লবের নেশায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে ‘ইসকন’ নামের সন্ত্রাসী সংগঠনকে তারা মাঠে নামিয়েছে।
ফ্যাসিবাদীরা সাধারণ হিন্দুদের অর্থের লোভ দেখিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাধারণ হিন্দুরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়নি। পা দিয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন। যেভাবে তারা আইনজীবী আলিফকে হত্যা করেছে, তা পুরো দেশকে হতবাক করেছে। অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও রাজনীতিবিদদের ‘বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার’ বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অভিমুখে হেফাজতে ইসলামের যাত্রা, সমাবেশ ও স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি থাকলেও সিদ্ধান্ত বদলে এই গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। পরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরীর সভাপতিত্বে গণজমায়েতে আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরীস, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, সহকারী মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, মাওলানা জাফর আহমদ ভাটুয়া প্রমুখ।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর