কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সাথে নিঃস্বার্থভাবে বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডসহ সকল দুর্ঘটনা ও দুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিয়ে কাজ করায় স্বীকৃতি সম্মাননা পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং নগদ অর্থ পেয়েছেন বিডি টোয়েন্টিফোর লাইভ ডট কমের কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন আকাশ। এসময় আকাশের হাতে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও নগদ অর্থ তুলে দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।

ইন্টারন্যাশনাল ভলানটিয়ার ডে-২০২৪ উদ্‌যাপন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিস মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক ভলানটিয়ার ডে-২০২৪-এর শুভ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। 

এ সময় অনুষ্ঠানে  উপস্থিত ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। এর আগে সকাল ৭টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ভলান্টিয়ারদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। 

পরে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। এসময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। 

প্রধান অতিথির ভাষণে সমবেত স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ‘সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এক্ষেত্রে আপনারা পেশাদার বাহিনীর সাথে কাজ করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। এজন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে ভূমিকম্পের ন্যায় ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবক এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অপরদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল তাঁর বক্তব্যে ভলান্টিয়ারদের অবদান স্মরণ করে বলেন, ‘২০১৩ সালে রানা প্লাজা ভবন ধস, ২০১৯ সালে চুড়িহাট্টা কেমিক্যাল দুর্ঘটনা, এফআর টাওয়ার অগ্নি দুর্ঘটনা, ২০২২ সালে বিএম কনটেইনার ডিপোর অগ্নিদুর্ঘটনা এবং ২০২৩ সালে বঙ্গবাজার ও খাজা টাওয়ার অগ্নিদুর্ঘটনায় আপনাদের সাহসী অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি। আপনাদের স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব ও নির্ভয় অংশগ্রহণ দেশ ও জাতির দুর্যোগকালীন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফ করেন মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এরপর ভলানটিয়ার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে শুরু হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা। মাননীয় প্রধান অতিথি শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। পূর্বাচল ট্রেনিং গ্রাউন্ড থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে পুনরায় ট্রেনিং গ্রাউন্ডে এসে শোভাযাত্রা সম্পন্ন হয়। 

এরপর অনুষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ ও অপারেশনাল কার্যক্রমে সহযোগিতার স্বীকৃতি হিসাবে সারা বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের মধ্যে ২২ জন ভলান্টিয়ারের হাতে স্বীকৃতি সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।

বাৎসরিক বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি হিসাবে ফায়ার সার্ভিসের ভলানটিয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিরা হলেন, ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিদ্দিক বাজার স্টেশন থেকে, ফয়সাল হোসেন শিপন, ফাতেমা তুজ রোজিনা, ডেমরা স্টেশনের ইয়াসিন হোসেন ইমন, সাভার স্টেশনের মোঃ মোশাররফ হুসাইন, নারায়ণগঞ্জ সদর স্টেশনের মোঃ সাদ্দাম হোসেন, খিলগাঁও স্টেশনের মোঃ ইয়াসিন শেখ ও সদরঘাট স্টেশনের ফারজানা রাখি। 

চট্টগ্রাম বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুমিল্লা সদর স্টেশনের মোঃ নাইমুল হাসান মজুমদার নাঈম, বান্দরবান সদর স্টেশনের মোসা: রুমানা আক্তর ও আগ্রাবাদ স্টেশনের মোঃ ছাইয়েদুর রহমান। রাজশাহী বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর স্টেশনের সৌরভ রহমান ও মোঃ ফরিদ আলম। সিলেট বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেট দরগাহ স্টেশনের মোঃ আবিদ হাসান খন্দকার ও সাঈদ ইসলাম হৃদয়। রংপুর বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রংপুর সদর স্টেশনের মোঃ গোলাম সাজ্জাদ হায়দার ও দিনাজপুর সদর স্টেশনের মোঃ সোহেল রানা। ময়মনসিংহ বিভাগের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ময়মনসিংহ সদর স্টেশনের রবিন মিয়া ও কিশোরগঞ্জ সদর স্টেশনের মোঃ সাখাওয়াত হোসেন আকাশ। 

এছাড়াও খুলনা বিভাগের ২ জন ও বরিশাল বিভাগের ২ জনসহ মোট ২২ জন স্বেচ্ছাসেবক কে ভলানটিয়ার অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। 

সবশেষে ভলান্টিয়ারদের অংশগ্রহণে সাজ-সরঞ্জামের বাস্তব ব্যবহার ভিত্তিক অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার বিষয়ে প্রশিক্ষণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ২ শতাধিক ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর পরিচালকগণ, উপপরিচালকগণ, ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। 

শাকিল/সাএ