জামালপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার দ্বিতীয় আসামি ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার ইসলাম রাফি রাশিয়া চলে গেছেন। রাশিয়াতে অবস্থানরত অবস্থায় নিজের একটি ছবি ফেসবুকের মাই ডে তে দিয়েছেন রাফি নিজেই।
এই ছবি ঘোরাফেরা করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবিটি নিয়ে জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। অস্ত্র মামলার আসামি দেশের বাইরে যাওয়াই পুলিশের কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
ছবিটিতে দেখা যায়, ছাত্রলীগ নেতা রাফির পরনে খাকি রং-এর জ্যাকেট ও প্যান্ট। পায়ে সাদা রঙের জুতা, গলায় মাফলার। মুখমণ্ডলজুড়ে দাড়ি। তার ডান হাতের কাছে একটি কালো রঙের ল্যাম্প পোস্ট ও পিছনে অনেক গাছ। সেই ছবিতে লোকেশন চিহ্ন দিয়ে ‘ভোরোনেজ, রাশিয়া’ লেখা রয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার ইসলাম রাফি সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানুর বিশ্বস্ত অনুসারী এবং পৌরসভার অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
মামলার নথি ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট দুপুর ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে র্যালি নিয়ে শহরের হাইস্কুল মোড়ের দিকে আসে। শিক্ষার্থীদের র্যালিতে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশি-বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া দেয় রাফিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় শিক্ষার্থীরা এবং কয়েকজন আহত হয়। এসময় পিস্তল হাতে রাফির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় গত ১৭ আগস্ট জামালপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিঠু মিয়া একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারহান আহমেদকে এবং দ্বিতীয় আসামি করা হয় রাফিকে। এছাড়া আরও ৩০৩ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়।
রাফির বাবা মো. আসলাম মোবাইল ফোনে জানান, ডিসেম্বর মাসের শুরুতে রাফি রাশিয়া চলে গেছে। অনেক আগেই চলে যাওয়ার কথা ছিল। মামলার কারণে যেতে দেরী হলো। স্টুডেন্ট ভিসা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। পরে জব ভিসায় গিয়েছে। তবে বিমানবন্দরে কোনো ঝামেলা হয়নি। নিরাপদেই গিয়েছে।
জামালপুর জেলা বৈষম্যবিরোীধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইশাহাক হাসান ইখলাস বলেন, ‘ছাত্রদের ওপর পিস্তল নিয়ে হামলাকারী কীভাবে দেশের বাইরে চলে যায়? এটা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা। এটা সরকারের ব্যর্থতা।’
এ বিষয়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমার যোগদানের আগে মামলাটি হয়েছে। তবুও আমি খোঁজ-খবর নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর