কুমিল্লার দেবিদ্বারে ফসলি মাঠের নির্জন এলাকা থেকে দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ গ্রামের ডিআইজি শাহ আলমের বাড়ির পশ্চিম-দক্ষিণ দিকের দোয়াইর জলার ফসলি মাঠের নির্জন জায়গা থেকে দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, উপজেলার জাফরগঞ্জ গ্রামের আলী মেম্বারের বাড়ির মৃত: দুলু মিয়ার পুত্র মনির হোসেন(৩০) খাগড়াছড়ির রামঘর এলাকার সুকেন্দ্রাইপাড়ার রুহুল আমিনের পুত্র মোহন মিয়া(২৮)। পেশায় ওরা দু’জন ডিস ক্যাবল লাইনের কর্মচারী ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী রেশমা জানান, তার স্বামী গতকাল দুপুরের খাবার খেয়ে বের হয়ে গেলেও আর ফিরে আসেনি। সন্ধ্যার পর বাজার করে লোক দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তাদের সংসারে ইব্রাহীম নামে সাড়ে ৩ বছরের এক পুত্র সন্তান এবং মনিরা নামে ১ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার শ্বশুর, শ্বশুরি, দেবর- ভাশুর কেউ নেই। ৩ ননদ আছেন, ওদের বিয়ে হয়েগেছে। ২ শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্ববিগ্ন। স্বামী হারানোর শোকে বার বার মুরছা যাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, রোববার ভোরে আবু কাউছার নামে এক যুবক গরুর জন্য ঘাস কাটতে যেয়ে নিহত মনিরের বাড়ির প্রায় পাঁচশত গজ দূরে ফসলি মাঠের খালেরপাড় নির্জন জমিতে ওই মৃত: ব্যক্তিদের দেখতে পান।
সংবাদ পেয়ে দেবিদ্বার-ব্রাক্ষণপাড়া সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন ও দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোক্তার আহমেদ মল্লিক ও অঞ্জন কুমার নাহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
জাফরগঞ্জ গ্রামের মৃত তফাজ্জল হোসেন মেম্বারের পুত্র ডিস ব্যবসায়ী বদিউল আলম(৩৬) জানান, নিহত দু’জনসহ তার ব্যবসায় ১২ জন কর্মচারী ছিল। গতকাল (শনিবার) সারাদিন কাজ শেষ করে ডিস অফিসে রাতের খাবার খেয়ে আমি বাসায় চলে যাই। সকালে এসে দেখি ওদের লাশ।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, জাফরগঞ্জ এলাকা আন্তঃজেলা মাদক বিক্রয় ও সেবনের অন্যতম স্পট। নিহতরা মাদক নেশার সাথে জড়িত ছিল। ঘটনাস্থলে খড়কুটা বিছিয়ে সেখানে মাদক সেবন করেছিল। মাদক সেবনেরর কিছু আলামত ইঞ্জেকশনের সিরিজ, পানীয় বোতল পাওয়া গেছে। নিহতদের সাথে আরো মাদক সেবক থাকারও সন্দেহ পোষণ করেন তারা। কারণ, এতো নির্জন জায়গায় কয়েকজন একত্রে না থাকলে দু’জন সাহস করার কথা নয়।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার-ব্রাক্ষণপাড়া সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন জানান, দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনা রহস্যজনক। মাদক সেবনে নিহত নাকি কেউ হত্যা করে এখানে ফেলে গেছে তা তদন্তস্বাপেক্ষে এবং ময়না তদন্তের পরেই বলা যাবে। তবে ছোরতহাল রিপোর্টে নিহতদের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর