
পবিত্র কুরআনের হাফেজ মঈনউজ্জামান মঈন পড়ালেখা শেষ করে চাকুরির পিছনে না ছুটে একজন কৃষি উদ্যোক্তা হতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ছোট বেলা থেকেই কৃষির প্রতি ছিল আগ্রহ সেই জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছেন এই কুরআনের হাফেজ। নিজে মাসরুমের উপর একটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেই চেষ্টা করছিল মাশরুম চাষ করতে ছোট পরিসরে করে আসছিলেন চাষ।
এরই মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের সাথে তার পরিচিতি ঘটে এর পর থেকেই সাফল্য দেখতে শুরু করেছেন তরুণ উদ্যোক্তা হাফেজ মঈন। বর্তমানে তার ২টি সেট রয়েছে মাশরুম চাষের জন্য, সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে তিনি এ চাষ করে আসছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পাংশা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্প স্পন ও মাশরুম উৎপাদন প্রদর্শনীর মাধ্যমে মাশরুম চাষের জন্য আধুনিক সকল ব্যবস্থা প্রদান করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাংশা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২ টি টিনের শেড করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাশরুম চাষ করছে মঈন, সেখানে স্থায়ী ভাবে তাক বসানো রয়েছে, পানির দেওয়ার জন্য রয়েছে আধুনিক যন্ত্র, ঝুলন্ত রয়েছে বেশ, মাশরুম বিক্রির জন্য রয়েছে একটি ভ্যান গাড়ি যা সম্পূর্ণ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রদান করেছেন।
উদ্যোক্তা হাফেজ মঈন জানান, তিনি মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করেছেন এ বছর প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন বলে তিনি জানান, এখন প্রায় প্রতিদিন ৩-৪ কেজি মাশরুম বিক্রি করছেন যার বাজার মূল্য ১ হাজার থেকে ১২ শত টাকা। এটা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।
তিনি আরো বলেন, আমার মাশরুমের ক্রেতা সকলেই শিক্ষিত মানুষ, যারা এ মাশরুমের গুণাগুন জানেন তারা মোবাইলের মাধ্যমে ফোন করে অর্ডার নেন আমরা তাদের বাসায় কিংবা বাজার এলাকায় ডেলিভারি দিয়ে থাকি, কৃষি বিভাগের দেওয়া ভ্যান যোগেও আমরা মাশরুম পৌঁছে দিয়ে থাকি, তবে গ্রামে এ ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও শহর এলাকায় মাশরুমের ক্রেতা ব্যাপক বলেও তিনি জানান।
হাফেজ মঈন রাজবাড়ীর জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার এমন কর্মে স্থানীয় বেশ কিছু তরুন এমন উদ্যোক্তা হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মঈন এলাকার গর্ব বলেও স্থানীয়রা জানান, মাদ্রাসায় পড়ে ইমামতি-মুয়াজিন না হয়ে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন এই তরুন উদ্যোক্তা হাফেজ মঈনউজ্জামান।
কসবামাজাইল ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এই মাশরুম চাষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সার্বক্ষণিক এই উদ্যোক্তাকে পরামর্শ প্রদানসহ যাবতীয় সমস্য দেখভাল করে আসছি, আশা করছি তিনি লাভবান হবেন।
পাংশা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রতন কুমার ঘোষ বলেন, পাংশা উপজেলার সর্বত্রই আমরা এ মাশরুম চাষিসহ সকল উদ্যোক্তাদের কৃষি বিভাগের পরামর্শ প্রদান করে থাকি। পাংশাতে আমরা আরো মাশরুম প্রর্দশনী দিতে কাজ করে যাচ্ছি। কসবামাজাইল ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে আমাদের একটি প্রর্দশনী আছে।
সেখানে আমরা নিয়মিত ভিজিট করে থাকি এবং উদ্যোক্তাকে উৎসাহ দিয়ে আসছি, মাশরুম মানব খাদ্যে অত্যন্ত উপকারী জিনিস। এটার মাধ্যমে ভাল লাভবানও হওয়া যায় সঠিক নিয়মে চাষ করলে লাভবান হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর