
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারতের ওপর নির্ভরশীল ও কৃত্রিম সংকট শেখ হাসিনার আমলেই তৈরি হয়েছে।
আমাদের যে বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং আমাদের ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ আলু সরবরাহের যে সিস্টেম এই সিস্টেমটার উন্নতি নাই বলে আজকে সিন্ডিকেটবাজরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মুনাফা করছে। ভারতকে সুবিধা দেওয়ার স্বার্থেই সিস্টেমের ফাঁক ফোকর তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা সরকার। বাজার সিন্ডিকেট যদি আমরা ভাঙতে না পারি তাহলে গণতন্ত্র ও ছাত্র আন্দোলনের যে চেতনা তা ভুলুন্ডিত হবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রফিকুল ইসলামের বাড়িতে আমরা বিএনপি পরিবার আয়োজিত এই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারা পৃথিবী থেকে এই পরিবর্তন কেউ অভিনন্দন জানানো হয়েছে, সমর্থন জানানো হয়েছে। কি মুসলিম বিশ্ব, কি গণতান্ত্রিক বিশ্ব প্রত্যেকে অভিনন্দন জানিয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ যিনি এইরকম ভয়ংকর একজন স্বৈরাচারকে যিনি নিজ দেশের শিশুদেরকে হত্যা করতে নিধা করেনি তাকে আশ্রয় দিয়েছেন। এবং তার জন্য যে কান্নাকাটি করছেন কত মিথ্যা অপপ্রচার করছেন কত অপদার্থ দিচ্ছেন তার শেষ নেই। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হাজার বছরের। আমরা জন্মের পর থেকে এখানে হিন্দু মুসলমান ভাঙন দেখিনি।
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী দেশে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকির নামে লুটপাট, ধ্বংসযজ্ঞ ও অর্থ পাচার করেছে। শেখ হাসিনা কখনোই তাদের বিচারের আওতায় আনেননি। শেখ হাসিনা নিজেকে ক্ষমতায় স্থায়ী করার জন্য এমন কোন পথ নেই যা অবলম্বন করেননি। এক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী, র্যাব ও সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ কারগারকেও তিনি অপব্যবহার করেছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। এমনকি আওয়ামী লীগের অনাচার ও নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফেসবুক, ইউটিউবে কথা বললে তাদেরকেও কারাগারে নিক্ষেপ করতেন শেখ হাসিনা।
বর্তমান সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের উদ্দেশ্য রিজভী বলেন, আপনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিয়ে কালক্ষেপণ করছেন যা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। সংস্কার শেষে কতদিনের মধ্যে আপনারা নির্বাচন দিবেন তা জনগণের স্পষ্ট করতে হবে। আর যে নির্বাচন গত ১৫ বছরে কেউ দিতে পারেনি সেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণই ঠিক করবে কোন দল বা কাকে তারা নির্বাচিত করবে। এতে করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সাজানো নির্বাচন ও ভোট চুরির কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে গেছে। কারণ ওই আমলে মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় মাঠে ভোটের সকালে যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী দেখা গেছে, বিকালেও একই লোকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাই মানুষের মাঝে গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই জরুরি।
রিজভী আরও বলেন, 'চিন্ময় কৃষ্ণ দাস নামে এক ব্যক্তি, যিনি একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অথচ সেই সংগঠনের নেতারাই জানিয়েছেন তাকে পূর্বেই অনৈতিক কাজের অপরাধে বহিষ্কার করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার অপরাধের জন্য তাকে গ্রেফতার করলো ভারত এই ইস্যুটাকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দোহাই দিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইলো। বাংলাদেশের মানুষ আজ তাদের চক্রান্ত বুঝতে শিখেছে।'
এ সময় 'আমরা বিএনপি পরিবার' -এর সভাপতি আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও আহতরা।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর