জয়পুরহাটের কালাইয়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও থ্রি ফেজ মিটার চুরির প্রতিবাদে কৃষক ও গভীর নলকূপের মালিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কে বিক্ষোভ করে। এসময় বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে পৌরসভার সরাইলে একটি এবং পুনট ইউনিয়নের দুইটি ট্রান্সফরমার-মিটার চুরি করে। এতে গভীর নলকূপ মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে কৃষকরাও পড়েছেন বিপাকে।
এর প্রতিবাদে আশেপাশের গ্রামের শত শত কৃষক ও গভীর নলকূপের মালিকরা পুনট বাসস্ট্যান্ডের পূর্বপাশে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ভুক্তভোগীরা প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে জয়পুরহাট-বগুড়ার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় রাস্তার দু'পাশে শত শত যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। প্রায় দেড়ঘণ্টা সড়ক অবরোধ অব্যাহত থাকে। খবর পেয়ে কালাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় কৃষক নাজমুল হক, মোকলেছার, আফজাল, গোলাম মোস্তফাসহ অনেকে জানান, হাজার হাজার টাকা খরচ করে আলু রোপণ করেছেন। এই সময়ে ক্ষেতে পানি প্রচুর দরকার। মিটার চুরির কারণে আলুর জমিতে পানি দিতে পারবো না বলে তারা গভীর নলকূপের মালিকদের সাথে এসে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন।
গভীর নলকূপের মালিক শাজাহান আলী ও আবু সায়েম জানান রাতে একসাথে তিনটি মিটার চুরি হয়েছে। শীত আসলেই ট্রান্সফরমার মিটার চুরি বৃদ্ধি পায়। মিটার চুরি করলে অর্থনৈতিক থেকে শুরু করে অনেক কিছুরই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। প্রায় সময় মিটার চুরি হলেও প্রশাসনের কোন নজরে আসে না তাই তারা আজকে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন।
ট্রান্সফরমার মিটার চুরি হওয়া গভীর নলকূপের মালিক পুনট সর্দার পাড়ার আজিম উদ্দিন জানান, সংঘবদ্ধ চোরেরা মিটার চুরি করে তারা একটি মোবাইলের বিকাশ নাম্বার ফেলে রেখে যায়। বিকাশে তাদের চাহিদা মত টাকা দিলে পরে একটি নিদিষ্ট জায়গায় মিটার ফেলে রেখে যায়।
জয়পুরহাট পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির কালাই জোনাল অফিসের ডিজিএম হামিদুল হক জানান প্রতিটি চুরির ঘটনা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ট্রান্সফরমার-মিটার চুরি রোধে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে সচেতন করা হচ্ছে।
কালাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, টহল পুলিশদের প্রতি পয়েন্টে পাহারা জোরদার করা হয়েছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। চোরদের শনাক্ত করতে এবং চুরি বন্ধে গভীর নলকূপের মালিকদেরকে বৃহস্পতিবার তাদেরকে থানায় ডাকা হয়েছে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান জানান, বিষয়টি বেশ দুঃখজনক, এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধীদের ধরতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ট্রান্সফরমার-মিটার চোরদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর