সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী নিজেদের রক্ষা করতে আত্মগোপনে চলে গেছেন। কেউ আছেন দেশে, কেউ দেশের বাইরে।তবে বেশিরভাগই ভারতে। এ অবস্থায় দলের কর্মী-সমর্থক ও ছোট ছোট নেতারা পড়েছেন বেকায়দায়। বাইরে থাকা অনেকে যোগাযোগ রাখতে পারছেন না পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে। কেউ কেউ আছেন আর্থিক সংকটে।
তবে এবার বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। বুধবার দিল্লি পুলিশের কর্মকর্তারা শহরটির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। এ সময় সেখানকার বাসিন্দাদের নথিপত্র যাচাই করে পুলিশ।
এর আগে, মঙ্গলবার দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর (এলজি) ভি কে সাক্সেনা অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তার এই নির্দেশের পরদিন দিল্লি পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর সাক্সেনার কার্যালয় মঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যসচিব ও পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি দিয়েছে। এতে ভারতের রাজধানীতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘‘কঠোর পদক্ষেপ’’ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই নির্দেশ পাওয়ার পর বুধবার দিল্লির কালিন্দি কুঞ্জ এলাকার বাসিন্দাদের নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। পুলিশের সদস্যরা সেখানকার বাসিন্দাদের প্রত্যেকের নথিপত্র যাচাই করেন।
কয়েক দিন আগে দিল্লির মুসলিম নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল লেফটেন্যান্ট গভর্নর সাক্সেনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিল্লিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ওই সময় তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ঘিরে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
দিল্লি পুলিশ বলেছে, তারা অবৈধভাবে বসবাসকারীদের শনাক্ত ও অবৈধ উপায়ে পাওয়া সরকারি নথিপত্র বাতিল এবং বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই অভিযান পরিচালনা করছেন।
এর আগে, ভারতের কলকাতা থেকে সিলেটের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি থানার পুলিশ। গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) ভোরে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে পশ্চিম জৈন্তা হিল জেলার একজন ট্রাকচালককে মারধরের অভিযোগে গত মাসে ডাউকি থানায় মামলা হয়েছিল।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান (মুক্তি), সহসভাপতি আবদুল লতিফ (রিপন) ও সদস্য ইলিয়াস হোসেন (জুয়েল)।
চার নেতাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সোমবার রাতে নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী (নাদেল)। ভারতে অবস্থানরত এই রাজনীতিবিদ বলেন, রোববার ভোরে মেঘালয়ের ডাউকি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে ডাউকি থানায় একজন মামলা করেছেন। এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর