নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং জাতীয় পর্যায়ের নেটওয়ার্ক / প্লাটফর্মের সঙ্গে কমিউনিটি পর্যায়ে FSFCSO- (Federated Small Holder Farmer Civil Society Organization) কে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন (Empowering Women CSOs to Ensure Good Governance (WEE) প্রকল্পের অধীনে এক কর্মশালা করেছে ট্রেইড ক্র্যাফ্ট এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল- বেঙ্গল বুবেরীতে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন (Empowering Women CSOs to Ensure Good Governance (WEE) প্রকল্পটি ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সহ-অর্থায়নে এবং ট্রেইড ক্র্যাফ্ট এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এর নেতৃত্বে স্থানীয় পর্যায়ে বিকাশ বাংলাদেশ এবং উলাশী সৃজনী সংঘ দ্বারা বাংলাদেশের ৫টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি গ্রামীণ নারীদের জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন অর্জনের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে ১৫ হাজার গ্রামীণ নারী এবং তাদের পরিবারকে সরাসরি সহায়তা করছে। এই প্রকল্পের অধীনে মোট ১০০ সদাইপাতি (Women Community Store) এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
উক্ত কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে ছিলেন- সুইস অ্যামবাসি, অক্সফাম বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, সলিডারি সুইস, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, কর্মজীবী নারী, ব্রেকিং দ্যা সাইল্যান্স, দুর্বার, ইনোভেশন কনসালটেশন, সিঙ্গার বাংলাদেশ ও আরো অনেক প্রতিষ্ঠান।
কর্মশালাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল Federated Small Holder Farmer Civil Society Organization (FSFCSO) এবং জাতীয় পর্যায়ের নেটওয়ার্ক ও প্লাটফর্মেও মধ্যে একটি সক্রিয় সংযোগ স্থাপন করা যাতে ভবিষ্যতে এই কমিউনিটি পর্যায়ের FSFCSO-কে নিয়ে অন্যান্য সমমনা প্রতিষ্ঠান গুলো নতুন উদ্যোগ নিতে পারে।
উক্ত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার- লায়লা জেসমিন বানু। তিনি তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে যে ৫১৪ টি FSFCSO প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, এই FSFCSO গুলো খুবই শক্তিশালী। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে এই FSFCSO গুলোর সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তারা একটি নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ সমাজ গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। তিনি তাঁর বক্তব্যে আরো উল্লেখ্য করেন যে যেহেতু প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই আমরা অন্য সমমনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এই FSFCSO গুলোর সংযোগ তৈরি করে দিতে চাই যাতে FSFCSO গুলো তাদের কার্যক্রম চলমান রাখতে পারে।”
প্রকল্পের অংশগ্রহণকারীরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে কীভাবে তাদের জীবনে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন তা তুলে ধরেন। তাঁরা তাদের নিজেদের পরিবর্তনের গল্পে উল্লেখ করেন- এই প্রকল্প থেকে তারা যেমন ব্যাবসার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়িত হয়েছেন ঠিক তেমনি বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ করে সামাজিকভাবেও ক্ষমতায়িত হয়েছেন। তারা এখন তাদের পরিবার এবং সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মতামত প্রদান করতে পারেন।
কর্মশালায় দলীয় কাজের মাধ্যমে FSFCSO গুলোকে আরো শক্তিশালী করতে ও তাদের কার্যক্রম চলমান রাখতে বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ উঠে আসে। এর মধ্যে কিছু সুপারিশ হলো-
আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ।
জাতীয় নেটওয়ার্কের সঙ্গে FSFCSO গুলোর কার্যকরী সংযোগ তৈরি করা। প্রকল্প শেষের পরও স্থানীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালু রাখা। প্রকল্পের সফলতা গুলো একটি অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা।
ট্রেইড ক্র্যাফ্ট এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে এই ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ সমাজে জেন্ডার সমতা, নারী ক্ষমতায়ন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর