বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব ও অপ্রতিষ্ঠিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। অনেক সময় যাচাই-বাছাই ছাড়াই তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, বিশেষত সামাজিক মিডিয়াতে ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে এবং সেগুলি ভারতের সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে প্রকাশ পাচ্ছে।
এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের তথ্য যাচাই সংস্থা "রিউমর স্ক্যানার" থেকে এসেছে, যা ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে ছড়ানো ভুয়া খবর এবং গুজবগুলোর অনুসন্ধান করেছে। ১২ আগস্ট থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমে ১৩টি ভুয়া খবর প্রচারিত হয়েছে, এমন দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, "রিপাবলিক বাংলা" সবচেয়ে বেশি, পাঁচটি গুজব ছড়িয়েছে। এর পরেই রয়েছে "হিন্দুস্তান টাইমস", "জি নিউজ" ও "লাইভ মিন্ট"—যারা প্রতিটি অন্তত তিনটি গুজব প্রচার করেছে।
এছাড়া, "রিপাবলিক", "ইন্ডিয়া টুডে", "এবিপি আনন্দ", এবং "আজতক"-এর মতো গণমাধ্যমও দুইটি করে গুজব ছড়িয়েছে। বাকি ৪১টি গণমাধ্যমের মধ্যে রয়েছে "এএনআই", "এনডিটিভি", "ফার্স্টপোস্ট", "টাইমস অব ইন্ডিয়া", "জি২৪", "নিউজ ৯", "টাইমস নাউ নিউজ" সহ আরও অনেক নাম।
এই ধরনের ভুয়া খবর এবং গুজব ছড়িয়ে পড়া গণমাধ্যমের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এবং "রিউমর স্ক্যানার" তাদের প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে।
গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের মিডিয়াতে এক ধরনের বিরোধিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল, তবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর এই বিরোধিতা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। কিছু প্রতিবেদন ও বিক্ষোভের মাধ্যমে বাংলাদেশে 'হাজার হাজার হিন্দু হত্যার' এবং 'হিন্দু নারীদের ধর্ষণ' করা হচ্ছে, এই ধরনের উস্কানিমূলক ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমের একত্রিত প্রভাবে অনেক সাধারণ ভারতীয় নাগরিক এই ধরনের অপ্রমাণিত আখ্যান বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর