পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানসহ তার পরিবারের চারজনের বিরুদ্ধে আলাদা ছয়টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মতিউর ও তার স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলীর বিরুদ্ধে দু’টি এবং বেনজীর, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে আলাদা চারটি মামলা দায়ের করেছে দুদক।
প্রথম মামলায় বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে নয় কোটি ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং দুই কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার ৬০ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন বেনজীর ও তার স্ত্রী জীসান মির্জা। জীসান মির্জার বিরুদ্ধে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার এই সম্পদ স্বামী বেনজীর আহমেদের অবৈধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় বেনজীর ও তার মেয়ে ফারহিন রিশতা বেনজীরকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় রিশতার বিরুদ্ধে আট কোটি ৭৫ লাখ ২৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
চতুর্থ মামলায় আসামি হয়েছেন বেনজীর ও তার দুই মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীর। তার বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ও ২৬(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্যদিকে, মতিউরের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ এবং এক কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২১৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় মতিউরের সঙ্গে আসামি হয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী। তার বিরুদ্ধে এক কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং দুই কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ও ২৬(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে দুদকে সম্পদের বিবরণী জমা দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান। গত এপ্রিলে একটি জাতীয় দৈনিকে বেনজীরের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি প্রকাশিত হয়। এরপর ২২ এপ্রিল বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে নামে দুদক।
বেনজীর, তার স্ত্রী ও কন্যাকে দুই দফা সময় দিয়ে তলব করলেও দুদকে কেউই আসেননি। জব্দ করা হয়েছে বেনজীরের শতকোটি টাকার সম্পদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। গত ১৪ অক্টোবর পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে বেনজীরসহ পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করে দুদক। ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউরের বিরুদ্ধে গত ২৩ জুন অনুসন্ধান শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর