বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ঘোষিত কমিশনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি রাখাসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহিন সরকার। এদিকে আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দিলেও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্রিফিংয়ের পর তা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
মাহিন সরকার বলেন, কমিশনে দেশ প্রেমিক সেনা সদস্যদের রাখতে হবে,ভুক্তভোগীদের রাখতে হবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ছাত্র প্রতিনিধি রাখতে হবে। দ্রুততম সময়ে এই কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। যারা এই ঘটনায় বন্দী আছেন তাদেরকে দ্রুত ন্যায় বিচারের মাধ্যমে মুক্তি দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা বক্তব্যের দ্বিচারিতার ব্যাখ্যা দিতে হবে। যে-সকল অফিসার ভুক্তভোগী তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হবে।
তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জন্য আমরা পাঁচদিন সময় দিচ্ছি। পাঁচ দিনের মধ্যে যদি জাতির সামনে কমিশন প্রকাশ না করা হয় অথবা তাতে কোনো দালাল থাকলে আপনাদের সাথে আমাদের রাজপথে দেখা হবে।
এসময় তিনি বিজিবির পূর্ব নাম বিডিআর নামে নামকরণেরও দাবি জানান।
সমাবেশে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাবেক লেফটেনেন্ট ইমরান কাদের বলেন, সেনাবাহিনী ও বিডিআরের মধ্যে যারা প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিল, শেখ হাসিনা তাদের ইউনিফর্ম খুলতে বাধ্য করেছেন। এবারের ছাত্রদের মতো বিডিআরের গণকবর ছিল। অনেক লাশ শনাক্ত করা যায়নি। এই লাশ তুলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহ প্রত্যাহার করতে হবে। কোনো বিদ্রোহ হয়নি। এটা ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
ঘোষিত ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. কমিশনের মধ্যে দেশপ্রেমিক সিনিয়র অফিসার এবং বিডিআর হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পূর্বাপর সম্পর্কে অবগত আছেন, এমন ব্যক্তিদের অবশ্যই রাখতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের কমিশনের সদস্য হিসেবে বিবেচনায় রাখতে হবে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ছাত্র প্রতিনিধি রাখতে হবে। যে কমিশন গঠিত হবে, সে কমিশন দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে। কারণ ইতোমধ্যে দেশপ্রেমিক অনেক অফিসার নিরপেক্ষ রিপোর্ট তৈরি করেছেন।
২. বিস্ফোরক মামলায় যারা জেলে ধুকে মরছেন, তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে মুক্তি দিতে হবে। আগামী শুনানীর দিন যেন বাংলাদেলশের মানুষের কাছে খুশির সংবাদটি পৌছে যায়।
৩. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার বক্তব্যে দ্বিচারিতার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
৪. সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নাম ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ থেকে পূর্বতন ‘বাংলাদেশ রাইফেলস’-এ ফেরত নিতে হবে।
৫. যে-সব দেশপ্রেমিক অফিসার ও জওয়ানদের লাশ শনাক্ত করা হয়নি, তাদের লাশ শনাক্ত করতে হবে। তাদেরকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে হবে।
এর আগে, সকাল এগারোটা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-জনতা ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা শহীদ মিনারে এলাকায় জড়ো হতে থাকেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর