নাটোরের বড়াইগ্রামের গড়মাটি মরা বিলে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে সংঘবদ্ধ চোরচক্রের হামলায় ১৩টি শ্যালো মেশিন চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কৃষিকাজে সেচনির্ভর এসব মেশিন চুরি হওয়ায় রবি ফসল চাষে ব্যাপক সংকটের আশঙ্কা করছেন তারা।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, বুধবার সকালে কৃষক নাঈম উদ্দিন জমিতে পানি সেচ দিতে এসে দেখেন, তার বসানো দুইটি শ্যালো মেশিন নেই। পরে আশপাশের জমিতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, একই গ্রামের আরও ১১ জন কৃষকের মোট ১৩টি শ্যালো মেশিন চুরি হয়েছে।
চুরি হওয়া মেশিনগুলোর মালিকদের মধ্যে রয়েছেন আহসানুল, মোজাম্মেল হক, খালেদ আলী, জাহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মিলন হোসেন, সাইদুল ইসলাম, রনি আহমেদ, আরমান মোল্লা, মিজানুর রহমান ও ইয়ার আলী। তারা জানান, শীতকালীন সবজি ও বোরো ধান উৎপাদনের মৌসুমে শ্যালো মেশিন চুরির ফলে জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ফসলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁরা শঙ্কিত।
চুরি হওয়া কৃষক আহসানুল ইসলাম বলেন, "এই মেশিন দিয়েই আমরা জমিতে পানি সেচ দিতাম। চুরি হওয়ায় জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে সেচ না দিতে পারলে পুরো ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।"
অপর কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, "একটা শ্যালো মেশিন কিনতে প্রচুর টাকা লাগে। আমাদের মতো কৃষকদের পক্ষে নতুন মেশিন কেনা কঠিন। চাষাবাদই যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে পরিবার চালাব কীভাবে?"
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, "আমরা মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত শুরু করেছি। এই অঞ্চলের কৃষির ওপর এর প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর। চুরি হওয়া মেশিনগুলো উদ্ধারের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।"
স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্যালো মেশিনের অভাবে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হলে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। সঠিক সময়ে সেচ দিতে না পারলে উৎপাদন কমে যাবে, যা পুরো অঞ্চলের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে।
সংঘবদ্ধ চোরচক্রের এই হামলায় নাটোরের বড়াইগ্রামের কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। শ্যালো মেশিন ফিরে পাওয়ার আশায় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন। দ্রুত সমাধান না হলে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর