জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলির স্পিল্টারে চোখের দৃষ্টি হারিয়ে পুরো পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে যায় সাইদুলের (২৫)। দৃষ্টি হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পরেন পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার যুবক মোঃ সাইদুল (২৫)। কর্মক্ষমতা আর নিজের দৃষ্টি হারানোর সাথে সাথে হারিয়ে ফেলেন নিজের স্ত্রীকেও। স্বামীর দুরবস্থা দেখে স্বামীকে তালাক দিয়ে অন্যত্র চলে যান স্ত্রী পান্না আক্তার।
সম্প্রতি সাইদুলের বিপর্যস্ত জীবন নিয়ে দি ডে ই লি স্টা র একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ঢাকার এক হৃদয়বান পাঠকের দৃষ্টিতে পড়ে। তিনি উক্ত সাংবাদিকের মাধ্যমে সাইদুলের সাথে যোগাযোগে করেন এবং সাইদুলের চাহিদা অনুযায়ী একটি ব্যাটারি চালিত রিকশা উপহার দেন।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দি ডে ই লি স্টা রের পটুয়াখালী প্রতিনিধি মোঃ সোহরাব হোসেন সাইদুলের হাতে এ রিকশাটি তুলে দেন।
রিকশাটি গ্রহণ করে সাইদুল বলেন, আমি কৃতজ্ঞ। আমার দুঃসময়ে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের প্রতি শুভকামনা। এখন আমি রিক্সাটির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবো। সমাজের হৃদয়বান এসব মানুষের জন্য আজও মানবতা টিকে আছে।
সাইদুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশুনা না করতে পেরে সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শরীরে অসংখ্য স্পিল্টারের অসহ্য ব্যথা আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের।
সাইদুল জানান, আমার দুঃসময় দেখে স্ত্রী পান্না আক্তার আমাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন।
তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে সামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্পিডস্টার বিশ্ব হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে একসপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখ থেকে স্পার্টার বের করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসা নেন তিনি। সেখানে তার চোখের অপারেশন করা হয়। স্পিল্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর