• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১০ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:২৩ রাত
bd24live style=

অবৈধ বাংলাদেশিদের শিশুরা ভর্তি হতে পারবে না স্কুলে

ছবি: সংগৃহীত

দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ইস্যুতে বিজেপি এবং ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এই মুহূর্তে চরমে পৌঁছেছে। দিল্লি রাজ্য সরকারের শিক্ষা বিভাগ সম্প্রতি একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করে সমস্ত স্কুলকে ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন শিশুদের পরিচয় সংক্রান্ত নথি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনও অবৈধ অভিবাসী পড়ুয়া যাতে স্কুলে ভর্তি হতে না পারে সে সম্পর্কে লক্ষ্য রাখতে হবে। অবৈধ বাংলাদেশি পরিবারের কোনও শিশুকে যেন স্কুলে ভর্তি করা না হয় এবং কোনো শিক্ষার্থীর নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে সে বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসনকে জানাতে হবে বলেও নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

দিল্লি রাজ্য সরকারের স্কুল শিক্ষা বিভাগের উপ পরিচালক সুভাষ কুমারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ভর্তি আটকাতে স্কুলগুলোকে কড়া ভর্তি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট নথি যাচাই-বাছাই করতে হবে।

তবে যেসব শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকরা দেশটিতে বৈধভাবে বসবাস করছেন তা প্রমাণ করতে জন্য কী কী নথি জমা দিতে হবে, তার উল্লেখ সেখানে নেই।

শিক্ষার্থীদের নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয় রয়েছে এমন ঘটনার বিষয়ে প্রতিটা জেলার ডেপুটি ডিরেক্টরকে (শিক্ষা) সাপ্তাহিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথাও বলেছে দিল্লির আম আদমি পার্টি (আপ) সরকারের শিক্ষা দপ্তর।

শিক্ষা বিভাগের তরফে সোমবার এই বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স' (সাবেক টুইটারে)-এ নির্দেশের প্রতিলিপি পোস্ট করে লেখেন, “একদিকে বিজেপি নেতারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ সীমান্ত পার করিয়ে দিল্লিতে নিয়ে আসছেন এবং তাদের ইডব্লুএস ফ্ল্যাট দিচ্ছেন। তাদের সেই সমস্ত সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে যা আসলে দিল্লির বাসিন্দাদের পাওয়া উচিত।”

“আর অন্যদিকে, রোহিঙ্গারা যাতে দিল্লিবাসীর জন্য থাকা অধিকার না পায় তা নিশ্চিত করতে আম আদমি পার্টির সরকার সম্ভাব্য সমস্তরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

প্রসঙ্গত ইডব্লুএস ফ্ল্যাট হলো ইকনোমিক্যালি উইকার সেকশন অর্থাৎ আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের জন্য ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পোস্টের পাশাপাশি, অতিশী ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর একটা পোস্টও উল্লেখ করেছেন যেখানে পুরী বলেছিলেন যে দিল্লিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ইডব্লুএস শ্রেণির আওতায় ঘর দেওয়া হবে।

সেই সময় হরদীপ সিং পুরীর এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনও রকম আবাস সংক্রান্ত সহায়তা পায়নি।

পরে অবশ্য হরদীপ সিং পুরীও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে কোনও অভিবাসীকে ঘর দেওয়া হয়নি।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে সময় জানিয়েছিল অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দেশের কাছে উত্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী উল্লেখ করেছেন, “দিল্লির শিক্ষা বিভাগ কঠোর নির্দেশ জারি করে জানিয়েছে রোহিঙ্গাদের দিল্লির কোনও সরকারি স্কুলে ভর্তি করা হবে না। আমরা দিল্লিবাসীর অধিকার কিছুতেই কেড়ে নিতে দেবো না।"

দিল্লিতে কতজন রোহিঙ্গা শরণার্থী বা অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন তার কোনো সরকারি পরিসংখ্যান নেই।

তবে ডিসেম্বর মাসে দিল্লি পুলিশের অভিযানে এ পর্যন্ত ১৭৫ জন সন্দেহভাজন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ভারত ১৯৫১ সালের জেনেভা শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। অর্থাৎ ভারত সরকারিভাবে কাউকে আশ্রয় দেয় না। এই পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ শরণার্থীই অবৈধভাবে বা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করে।

আরটিআইয়ের (রাইট টু ইনফরমেশন) জবাবে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে কতজন অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন, সে সংক্রান্ত তথ্য তাদের কাছে নেই।

তবে ইউএনএইচসিআর (ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল) -এর তথ্য বলছে, ২২,৫০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী ভারতে রয়েছে, যার মধ্যে ৬৭৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী দেশের বিভিন্ন অংশে আটক রয়েছে।

সম্প্রতি দিল্লি পুলিশ পাঁচজন বাংলাদেশিসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা দিল্লিতে অবৈধ নথি তৈরির কাজ করতেন বলে অভিযোগ।

দক্ষিণ দিল্লির ডিসিপি অঙ্কিত চৌহান বিবিসিকে বলেছেন, "এখনও পর্যন্ত আমরা ১১ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি, যার মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি। অবৈধ কাগজপত্র তৈরির জন্য কাজ করছিল এই নেটওয়ার্ক। এখনও পর্যন্ত কত লোকের অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করেছে, সেটা তদন্ত করলে জানা যাবে।"

দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

আসন্ন বিধানসভা ভোটকে ঘিরে উত্তপ্ত আবহাওয়ায় দিল্লিতে রোহিঙ্গা অভিবাসী সংক্রান্ত ইস্যু বেশ বড় হয়ে উঠছে। একদিকে যেমন আপ এই প্রসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তেমনই দিল্লিতে রোহিঙ্গা ও অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বসতি স্থাপনের জন্য আম আদমি পার্টি উৎসাহ দিচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে বিজেপি।

বিজেপির মুখপাত্র ইয়াসির জিলানি বিবিসিকে বলেছেন, “আম আদমি পার্টি সরকার দিল্লিতে অবৈধ অভিবাসীদের উৎসাহিত করেছে এবং নিজেদের ভোট ব্যাংক বাড়ানোর জন্য তাদের নথি তৈরিও করিয়ে দিয়েছে।”

“আমরা এ জাতীয় কার্যকলাপ একেবারেই বরদাস্ত করব না এবং শেষ অবৈধ অভিবাসীকে চিহ্নিত না করা পর্যন্ত বিজেপি এ বিষয় নিয়ে চুপ থাকবে না।”

আবার আম আদমি পার্টিও অভিযোগ তুলেছে। আম আদমি পার্টির মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা কক্কর বিবিসিকে বলেছেন, "দেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের, দিল্লির আইনশৃঙ্খলা দিল্লি পুলিশের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশকারীরা দিল্লিতে ঢুকে পড়লে তার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী কিন্তু বিজেপি।”

বিজেপির মতোই অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছে আম আদমি পার্টিও।

প্রিয়াঙ্কা কক্কর বলেছেন, "আম আদমি পার্টি প্রত্যেক অবৈধ অভিবাসীকে চিহ্নিত করবে এবং কোনও অবৈধ অভিবাসী যাতে দিল্লির নাগরিকদের জন্য যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা না পায়, সেটা নিশ্চিত করবে।"

চলতি মাসের গোড়ার দিকে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা দিল্লির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই তৎপর হয়ে ওঠে দিল্লি পুলিশ।

বেশ কয়েকটা এলাকায় অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। লোকজনের নথিও পরীক্ষা করেছে।

দিল্লির বস্তি, বেআইনি কলোনি, এমনকি ফুটপাথে বসবাসকারী মানুষের নথিপত্রও খতিয়ে দেখছে সেখানকার পুলিশ।

এদিকে, দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনও (এমসিডি) অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ জারি করেছে। পুরসভার নির্দেশে বলা হয়েছে, দিল্লিতে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসী এবং স্কুলে পাঠরত অভিবাসী অভিভাবকদের সন্তানদের চিহ্নিত করতে হবে।

রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর একদিকে সরিয়ে রাখলে বলা যায় বর্তমান আবহে দিল্লিতে রোহিঙ্গা অভিবাসীদের মধ্যে কিন্তু ভয় ও অস্বস্তি কাজ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেন, “যে সমস্ত রোহিঙ্গারা কোনও মতে নিজেদের দেশ ছেড়ে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে এসেছেন, তারা খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে।”

“ইউএনএইচআরসি কার্ডের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিশুদের স্কুলে ভর্তি করা হয়। এখন আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, ইউএনএইচআরসিতে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পড়ুয়াদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাবে।”

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com