• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৬ মিনিট পূর্বে
সম্পাদনা: সালাউদ্দিন আহমেদ
সাব এডিটর
প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:৩০ রাত
bd24live style=

বিটিআরসি’র তড়িঘড়ি নীতিমালা, বাড়বে ইন্টারনেটের দাম

প্রতীকী ছবি

অবকাঠামো ভাগাভাগির নতুন নীতিমালাকে (ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন) কেন্দ্র করে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নতুন এ নীতিমালা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালের আগের মতোই টেলিযোগাযোগ খাতে একটিমাত্র মোবাইল অপারেটরের আধিপত্য নিশ্চিত হবে।

অন্য দিকে দেশীয় বিনিয়োগে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো পড়বে অস্তিত্ব সংকটে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে দেশীয় উদ্যেক্তাদের বিনিয়োগে পরিচালিত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে দেশে দাম বাড়বে ইন্টারনেট সেবার। এমনকি এতে করে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাও বিঘ্নিত হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটরদের হাতে দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা তুলে দেওয়ার চিন্তা থেকেই কোনো প্রয়োজন ছাড়াই ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তড়িঘড়ি করে ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন’ অনুমোদন করতে যাচ্ছে বিটিআরসি। তবে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার চাহিদা বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিটিআরসি দাবি করেছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর এই ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন’ অনুমোদন করার তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইনের আলোকে এর আগে একটি এনটিটিএন নীতিমালা করা হয়েছে। গত প্রায় দুই বছর সংশোধনের প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখে নতুন ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন’ অনুমোদনের বিষয়টি বড় ধরনের প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। বিটিআরসির এই বিতর্কিত উদ্যোগ টেলিযোগাযোগ খাতে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করবে। বরং বিদম্যান এনটিটিএন গাইডলাইন সংশোধনের জন্য আরও দুই বছর সময় দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদিত হলে টেলিযাগাযোগ খাতে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথ আরও প্রশস্ত হতো বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ অরেছেন।

বিটিআরসি হঠাৎ করেই একটি ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন’ করার কথা জানিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর এই গাইডলাইনের খসড়া তাদের ওয়েবসাইটে দেয়। খসড়া অনুযায়ী মোবাইল অপারেটরদের নিজস্ব ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া এর মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়ারও সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে এ নীতিমালা অনুমোদিত হলে টেলিযোগাযোগ খাতের সব ধরনের সেবার নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র তিনটি মোবাইল অপারেটরের কাছে চলে যাবে। তবে নতুন নীতিমালার মাধ্যমে মূলত তিনটি নয়, ২০০৮ সালের পূর্বের মতো একটি মাত্র মোবাইল অপারেটরের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে আশঙ্কা বিএষজ্ঞদের।

টেলিযোগাযোগ খাত বিশেষজ্ঞরা জানান, ২০০৮ সালের আগে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে একটি মোবাইল অপারেটরের একক আধিপত্য ছিল। মূলত এ মোবাইল অপারেটরের কাছে আরও তিনটি মোবাইল অপারেটর এবং ইন্টারেনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো জিম্মি হয়ে পড়েছিল। কারণ সেসময় ট্রান্সমিশন এবং ব্যান্ডউইথের পাইকারি সরবরাহ এই মোবাইল অপারেটরের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেসময় প্রতি সার্কিট ট্রান্সমিশন সেবার জন্য ওই মোবাইল অপারেটরকে অন্য দুটি মোবাইল অপারেটরের ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হতো।

আবার প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পরিবহনের জন্য ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হতো। এছাড়া ভয়েস কলের জন্য আন্ত:সংযোগের ক্ষেত্রে অন্য তিনটি মোবাইল অপারেটরের জন্য মাত্র ১০০টি শেয়ারিং সার্কিট খোলা রাখতো প্রভাবশালী মোবাইল অপারেটরটি। ফলে সাধারণ অন্য তিনটি অপারেটরদের গ্রাহকরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এনটিটিএন লাইসেন্সের জন্য ফাইবার অ্যাট হোম একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। কারণ সেসময় এ ব্যবসার জন্য বিনিয়োগের ঝুঁকি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নিতে চায়নি। ফলে দেশের প্রথম বেসরকারি এনটিটিএন অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পায় ফাইবার অ্যাট হোম। এ প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরুর পর মোবাইল অপারেটরদের জন্য সার্কিট প্রতি ট্রান্সমিশন সেবার মূল্য ১৫ লাখ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকায় নেমে আসে।

ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের প্রতি এমবিপিএসের পরিবহন খরচ ১০ হাজার টাকা থেকে ৩০০ টাকায় নেমে আসে। পরে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দ্বিতীয় বেসরকারি এনটিটিএন অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পায় সামিট কমিউনিকেশনস। এই লাইসেন্স পাওয়া ছাড়াও পরবর্তী সময়ে সাবমেরিন কেবলস কোম্পানি ও টাওয়ার সেবার লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে সামিটের বিরুদ্ধে।

টেলিযোগাযোগ খাত বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, তড়িঘড়ি করে নতুন ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন তৈরির উদ্যেগ অহেতুক। এটি অনুমোদন পেলে টেলিযোগাযোগ খাতে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার সৃষ্টি হবে। কারণ এর ফলে গত দেড় দশক ধরে টেলিযোগাযোগ ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা দেশীয় এনটিটিএন কোম্পানি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।

তিনি বলেন, এর পাশাপাশি মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ব্যবসারও দখল নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে দেশে আবারও ২০০৮ সালের আগের মতো ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম বাড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। বিদ্যমান এনটিটিএন গাইডলাইনের দুই একটি বিষয় নিয়ে মোবাইল অপারেটরদের কিছু পর্যবেক্ষণ ও বিতর্ক ছিল। এ কারণে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে বিটিআরসিতে বিদ্যমান এনটিটিএন নীতিমালা সংশোধনের একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ প্রস্তাবের আলোকে বিটিআরসি একটি কমিটি গঠন করে। পরে ওই কমিটি তিনবার পরিবর্তন করা হয়। অথচ ওই নীতিমালা সংশোধন করা হলে এখন এ ধরনের বিতর্কিত গাইডলাইন তৈরির প্রয়োজন হতো না।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল’র খণ্ডকালীন শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার বলেন, খসড়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইনের যে উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনের কথা বলা হয়েছে, তা বিদ্যমান এনটিটিএন নীতিমালার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। এর অর্থ এনটিটিএন নীতিমালা সংশোধনই যথেষ্ট ছিল। সেটা না করে একই ধরনের নতুন একটি গাইডলাইন প্রণয়নের উদ্যোগ ঠিক কী কারণে হচ্ছে, তা বোধগম্য নয়।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com