টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় বন বিভাগের বিতর্কিত জমি নিয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে বসবাসরত বাসিন্দাদের উচ্ছেদের জন্য মাইকিং করা হলেও স্থানীয় বাসিন্দারা এবং বিএনপি এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে ধলাপাড়া স্কুল মাঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। তারা বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানকে অবৈধ বলে দাবি করে এবং বসবাসরত মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়। এছাড়াও আটিয়া অধ্যাদেশের আইন ৮২ বাতিলের দাবি করেন। এ আইনের আওতায় ৪৫ হাজার একর জমি রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থানীয় নেতা ওবায়দুল হক নাসির সমাবেশে বলেন, “বন বিভাগের এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়া অন্যায় এবং জনগণের প্রতি সরাসরি আঘাত। শত বছরের ভিটেমাটি থেকে কাউকে উচ্ছেদ করার আগে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায়, আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও তীব্র করব। জনগণের অধিকার রক্ষায় আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত।”

সমাবেশে অংশ নেওয়া বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, তারা বহু প্রজন্ম ধরে ওই জমিতে বসবাস করছেন। হঠাৎ করেই তাদের উচ্ছেদ করে পুনর্বাসন না দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত অমানবিক। এক বাসিন্দা বলেন, “জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু ভিটেমাটি ছাড়ব না। এটা আমাদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি। এখানে শত বছর ধরে আমাদের বসবাস। এখন হঠাৎ করে বন বিভাগ উচ্ছেদ করতে চায়, এটা আমরা মানব না।”

বন বিভাগ বলছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তারা এই জমি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিএনপি নেতা ওবায়দুল হক নাসির আরও বলেন, “এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে জনগণের প্রতি সরকারের অমানবিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। আমরা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথেও প্রতিরোধ করব। বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করলে ঘাটাইলজুড়ে আরও বড় আন্দোলনের মুখোমুখি হতে হবে।”

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালালেও বাসিন্দাদের প্রতিবাদ দিন দিন আরও জোরদার হচ্ছে।

সালাউদ্দিন/সাএ