
রাজবাড়ীর পাংশা শহরে থানার পাশে আইডিয়াল গার্লস কলেজ অবস্থিত এ কলেজ প্রতিষ্ঠায় পাংশার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মরহুম আব্দুল ওহাব সাহেব ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। তৎকালীন অধ্যক্ষ ও এলাকাবাসীর সার্বিক প্রচেষ্ঠায় নারী শিক্ষা উন্নয়নে শহরের প্রাণ কেন্দ্রে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। নারী শিক্ষার অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রেখে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে।
সম্প্রতি একাধিক পত্রিকায় কলেজের অধ্যক্ষের সেচ্ছাচারিতায় বিনা বেতনে ২০ বছর চাকুরী করছেন ৩ শিক্ষক শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কি ভাবছেন এমন বিষয় নিয়ে কথা হয় কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নানের সাথে। তিনি সাংবাদিকদের কলেজে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান এবং এ বিষয়ে কলেজে সংরক্ষিত নথিপত্রের আলোকে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে কথা বলেন।
পাংশা আইডিয়াল গার্লস কলেজের শিক্ষক ২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করার দাবী করা ৩ জনের মধ্যে একজন সিদ্ধিরাম ঘোষ তার বিষয়ে কলেজের নথি থেকে পাওয়া যায় তার চাকুরির জন্য দেওয়া সার্টিফিকেট জাল প্রমাণিত হওয়ায় তার বিল করা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট পাংশা উপজেলার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ আলী স্বাক্ষরিত স্মারক নং-০৫.৩০.৮২৭৩.০০২.০৯৯.০৮২.২০-৭৬৪ কলেজ অধ্যক্ষকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয় আইডিয়াল গার্লস কলেজে কর্মরত সিদ্ধরাম ঘোষ, প্রভাষক কম্পিউটার শিক্ষা এর বেতন ভাদাদি এমপিও ভুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় বহুভাষী সাটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার ) বগুড়া কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্রটি যাচাই বাছাই সাপেক্ষে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এরই প্রেক্ষিতে ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) বগুড়া, কমিস্পউটার সনদ যাচাই সংক্রান্ত ফলাফল প্রকাশ করেন। নেকটারের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান সাক্ষরিত স্মারক নং-৫৭.২১.০০০০.০০৭.৩৬.০০২.২২.২৪৩ সেখানে স্পষ্ট সনদ নং ৬৫২০ রেজি ৯০৫ কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয় রেজ্রিষ্টার যাচাইয়ে দেখা যায় যে, সনদটি নেকটার কর্তৃক ইন্সুকৃত নয়, মন্তব্যের ঘরে লেখা সনদটি জাল /ভুয়া।
এ ছাড়াও ২০ বছর ধরে পাংশা আইডিয়াল গার্লস কলেজে তিনি চাকুরী করছেন এমন বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা- তিনি ব্র্যাকে চাকুরী করতেন, ২০০৬ সালের ১৭ জুন ব্র্যাক থেকে পাওয়া চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয় ১৯৯০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ৩ জুন পর্যন্ত নিরবিচ্ছন ভাবে ব্র্যাকে সিদ্ধিরাম ঘোষ চাকুরিরত ছিলেন।
অপর একজন তপন কুমার বিশ্বাস তার এমপিও হয়নি তার এমপিও ভ’ক্তির সময় কাগজপত্র যাচাইকালে তাহার কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা সঠিক না থাকায় এমপিও হয়নি। এখানে কেন অধ্যক্ষকে দোষারোপ করা হচ্ছে এমন অভিযোগ কেন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কর্মরত শিক্ষকরা বলেন বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এখানে অধ্যক্ষের কোন হাত নেই, আমাদের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা বানোয়াট কথাবার্তা ছড়ানো হচ্ছে। এ কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের সহধর্মিণী মিসেস সাঈদা হাকিম, রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম নিজেও এ বিষয়ে তদবির করে এমপিও ভ’ক্ত করাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, কাগজপত্র সঠিক না থাকায়।
৩য় জন রফিকুন্নবী চৌধুরী তিনি ওই কলেজের শিক্ষক ছিলেন না বলে দাবী অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানের তিনি পাট-টাইম (খণ্ডকালীন) শিক্ষক ছিলেন রফিকুন্নবী চৌধুরী ২০০৫ সালের ১৫ ফ্রেরুয়ারী তারিখে কলিমহর জহুরুনেচ্ছা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট যোগদান করেন। ১২/০২/২০০৫ ইং তারিখে কলিমহর জহুরুনেচ্ছা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্রে উল্লেখ্য রয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন আমাদের কলেজের সুনাম নষ্ট করতে একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে তৎপর রয়েছে এটাও তাদের অংশ, আমরা চাই আপনারা (সাংবাদিক) বস্তুনিষ্ঠ সঠিক সংবাদ পরিবেশন করুণ সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ আপনারা মিথ্যা তথ্য প্রচার করলে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমার কোন স্বেচ্ছাচারিতা ছিল না আজও নেই শিক্ষকরা ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করে থাকেন-প্রতিষ্ঠাকালিন অনেক শিক্ষক ছিলেন দীর্ঘদিন বেতন না হওয়ায় অনেকেই কলেজ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, যারা সততা নিষ্ঠা ও ধৈর্যধারণ করেছিলেন তারা সফল হয়েছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর