
বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত ৩৬ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সুবিমল চাকমা বাদি হয়ে মামলা করেছে।দুদকের পটুয়াখালী কার্যালয় এজাহার ভুক্ত করে বৃহস্পতিবার বরগুনার বিশেষ জজ আদালতে এজাহার কপি প্রেরণ করা হয়েছে। সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর আলহাজ্ব মো: নুরুল আমীন।
জানা যায়, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সুবিমল চাকমা ২২ ডিসেম্বর বাদি হয়ে বরগুনা-২ আসনের (পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী) সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করেন, সাবেক ওই সংসদ সদস্য ১৯৯৪ সাল হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরে তিনি নিজ নামে জমি, ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রয়সহ ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৩ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং গাড়ি ক্রয় ও অন্যান্য বিনিয়োগসহ ৩১ কোটি ০৮ লাখ ১ হাজার ৮২৪ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৩ টাকা এবং ৩১ কোটি ০৮ লাখ ১ হাজার ৮২৪ টাকা সর্বমোট ৩৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮৭ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন। উক্ত সময়ে তার নামে, ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি ২৪ রাখ ৯৭ হাজার ৯৯৭ টাকা। ওই ঋণ বাদ দিয়ে ৩৫ কোটি ৯৮ রাখ ৬৪ হাজার ৬৮৭ টাকার নীট সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
অপরদিকে ওই সময়ে তার আয়কর নথিতে প্রদর্শিত পারিবারিক ব্যয় পেয়েছে ১৬ কোটি ৩৫ রাখ ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা। সাবেক সংসদ সদস্যের পারিবারিক ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৭৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯০ টাকা এবং ১৬ কোটি ৩৫ রাখ ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা। সর্ব মোট ৩৭ কোটি ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৫৩৪ টাকা। দুদক অনুসন্ধানকালে গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পেয়েছে ১ কোটি ১১ রাখ ৮৯ হাজার ৩৭০ টাকা। ওই সংসদ সদস্যের আয় উৎসবিহীন সম্পদ ৩৭ কোটি ০৮ লাখ ৭৬ হাজার ৫৩৪ টাকা। এখান থেকে ১ কোটি ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭০ টাকা বাদে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৩৫ কোটি ৯৬ রাখ ৮৭ হাজার ১৬৪ টাকা প্রাথমিক তদন্তে বেশি পেয়েছে দুদক।
বাদি সুবিমল চাকমা বলেন, দুদক প্রধান কার্যালয় ১৯ ডিসেম্বর আমাকে ওই সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর অনুমোদন দেয়। আমি অনুমোদন পেয়ে ২২ ডিসেম্বর এজাহার করে পটুয়াখালী অফিসকে আসামি শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্তরের জন্য পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে ওই সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ১৬৪ টাকা মূল্যের সম্পদ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে আসামী শওকত হাচানুর রহমান রিমনের নিকট তথ্য প্রমাণ চাওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পটুয়াখালী অফিস যখন তদন্ত করবে তখন তথ্য প্রমাণ চাইবে।
এ ব্যাপারে একাদশ সংসদের বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন মুঠোফোনেসাংবাদিকদের বলেন, দুদক আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছে তার কোনো সত্যতা নেই। আয়ের বহির্ভূত কোনো সম্পদ আমার নেই। আমি বরগুনা ইসলামী ব্যাংক থেকে আমার ব্যবসার অনুকূলে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। সমপরিমাণ সম্পদ ব্যাংকে বন্ধক রেখেছি।
এছাড়া আমার ঠিকাদারি ও অন্যান্য ব্যবসার আয়কর আপডেট। আয় বহির্ভূত কোনো অর্থ সম্পদ আমার নেই। আমাকে কোনো প্রকার জিজ্ঞাসাবাদ না করে দুদক আমার প্রতিপক্ষ দ্বারা অন্যায়ভাবে বাধ্য হয়ে আমার বিরুদ্ধে হয়রানি মুলুক মামলা করেছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমি নির্বাচনও করিনি। আমি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান দুইবার, উপজেলা চেয়ারম্যান একবার ও তিনবারের সংসদ সদস্যসহ ২৬ বছর জনপ্রতিনিধি ছিলাম। ৩ কোটি টাকার বেশী সম্মানী পেয়েছি। বরিশাল বিভাগে ১০ বার শ্রেষ্ঠ করদাতা হয়েছি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর