ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনলাইন সার্ভারে সমস্যা থাকায় বন্ধ রয়েছে নামজারিসহ খাজনা আদায় ও রেজিস্ট্রি কার্যক্রম। ব্যাহত হচ্ছে সরকারের রাজস্ব আদায়। ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভূমি নামজারি সহ যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইন ভিত্তিক করার নিমিত্তে অনলাইন সংস্কারের লক্ষ্যে সার্ভার বন্ধ রাখা হয়। গত একমাস ধরে সার্ভার বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে ভূমি সংশ্লিষ্ট সকল কাজে। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় নামজারি ও খাজনা আদায়। নামজারি ও খাজনা আদায় না হওয়ায় কমে গেছে জমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রম। অনেকে তাদের প্রয়োজনে জমি বিক্রি করলেও খাজনার চেক না পাওয়ায় রেজিস্ট্রি দিতে পারছেন না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। সার্ভার কবে নাগাদ সচল হবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ বলতে পারছেন না। ডোমার সাব রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে ৭০খানা দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। যাহা অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ।
সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বিক্রিত জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা ছোটরাউতা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন আমার মা অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে জমি বিক্রি করে বায়না গ্রহণ করি। ভূমি অফিসের সার্ভার বন্ধ থাকায় খাজনার চেক উত্তোলন করতে পারছি না। ফলে জমি রেজিস্ট্রি হচ্ছে না। জমি রেজিস্ট্রি দিতে না পারায় মানুষ অবশিষ্ট টাকা দিচ্ছে না। টাকা না পাওয়ায় চরম সমস্যায় আছি।
ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের আঠিয়ায়াবাড়ী গ্রামের অরবিন্দু রায় জানান, ৭দিন ধরে ঘুরতেছি। অনলাইন সার্ভার সমস্যার কারণে খাজনা দিতে পারছি না। খাজনার চেক ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি, নামজারির আবেদন কোনোটাই হচ্ছে না।
ডোমার উপজেলা ভূমি অফিস সূত্র জানায়, সার্ভার সচল না থাকায় উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন ভোগডাবুড়ীতে গত এক মাসে একটি টাকাও খাজনা আদায় সম্ভব হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোটা নীলফামারী জেলায় সার্ভারের একই অবস্থা বিরাজ করছে।
ডোমার সদর, পৌরসভা ও হরিণচড়া ইউনিয়নের তহশিল অফিসের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা দুলাল হোসেন জানান, প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছেন খাজনা দিতে সার্ভার বন্ধ থাকায় খাজনা নেয়া যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে একটু পাওয়া যায় তবে দু একটি চেক পাওয়ার পর আবার তা বন্ধ হয়ে যায়।
ডোমার সাবরেজিস্ট্রার সিরাজুল ইসলাম জানান, রেজিস্ট্রি আইনে হালনাগাদ খাজনা দেয়া বাধ্যতামূলক। মানুষ তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে জমি বিক্রি করে থাকেন। জমির অন্যান্য কাগজপত্র ঠিক রেখে অনেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে অনুরোধ করছেন কিন্তু খাজনার চেক না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। সার্ভার বন্ধ থাকলে আমরা কি করতে পারি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুন ফেরদৌস হ্যাপি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। আশা করছি আগামী নতুন বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সার্ভার সচল হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর