
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের বন্ধ থাকা আক্কাসুর রহমান আঁখি ছাত্রাবাসে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপন করেছে তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এ উপলক্ষ্যে আঁখি হলের ডাইনিং রুমে খিচুড়ি পার্টির আয়োজন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্যাম্পাসটির অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে এ পার্টি অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনের নেতৃত্ব দেন তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ মোল্লার অনুসারীরা।
ছাত্রদলের সাবেক কমিটির সহ-প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হাসিবুল হোসেনের ফেসবুক পোস্টে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বন্ধ থাকা আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের ডাইনিং রুমে খিচুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খিচুড়ি উৎসবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আনাগোনাও ছিল। শিক্ষার্থীরা এখনো হলে উঠতে না পারলেও কি করে বন্ধ থাকা আঁখি হলে এ ধরনের আয়োজন হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আন্দোলনের সময়ে আঁখি ছাত্রাবাস বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ছাত্রাবাস বন্ধ। নতুন ছাত্রাবাস চালু হয়নি। সুতরাং কোন শিক্ষার্থীরাও সেখানে যাওয়ার কথা না। তাহলে কিসের ভিত্তিতে সেখানে একটি রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুষ্ঠান সেখানে পরিচালনা হয়!
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চাই। বন্ধ হলে ছাত্রদলের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং অগ্রহণযোগ্য।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক আহমেদ বলেন, বন্ধ ছাত্রাবাসে পার্টি করাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ছাত্রাবাস মূলত শিক্ষার্থীদের বসবাসের জন্য নির্ধারিত একটি জায়গা। তাছাড়াও হলও এখন বন্ধ। এমন একটি পরিবেশে ছাত্রদলের পার্টির আয়োজন করা নিতান্তই বেমানান এবং অনুচিত। শৃঙ্খলা ও নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। তাই ভবিষ্যতে এমন কার্যকলাপ এড়াতে কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এই বিষয়ে ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্ত বলেন, আমরা অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে এই আয়োজন করেছি। প্রথমে যখন অধ্যক্ষের কাছে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আয়োজনের অনুমতি চাই, তখন ম্যাম বলেন, তোমরা হোস্টেল সুপারের মাধ্যমে দরখাস্ত করো। এরপর হোস্টেল সুপার অধ্যক্ষ ম্যামের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমাদের পার্টির আয়োজনে সহায়তা করেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রানী মণ্ডল বলেন, তারা (ছাত্রদল) পার্টি করেছে কিনা জানি না, তবে শিক্ষার্থীরা আমার থেকে অনুমতি নিয়েছিল যে তারা হলের ডাইনিংয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাবে এবং হোস্টেল সুপারের উপস্থিতিতে তারা তাদের আয়োজন করবে।
এই বিষয়ে তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ মোল্লা বলেন, ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের বাড়ির মতো। কিন্তু ক্যাম্পাসে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে সবাই মিলে বসা যায়। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় তারা বন্ধ হলে পার্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু তারাই আমার অনুসারী নয়। যেহেতু আমি তিতুমীর কলেজের একজন প্রতিনিধি, তাই সকল শিক্ষার্থীই আমার অনুসারী। এক্ষেত্রে, আমরা যদি কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে নিজেদের কাজ করি, তাহলে কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর