• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩ মিনিট পূর্বে
খায়রুল আলম রফিক
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৮:৪৫ রাত
bd24live style=

ডিআইজি অফিসে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিচয়ে হুমকি, ভিডিও ভাইরাল

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ময়মনসিংহ ডিআইজি অফিসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের এ রকমের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওটি নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেছেন ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের পলাতক সাবেক এমপি মোহিত উর রহমান শান্ত। এ ঘটনায় জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনসহ সর্বস্তরে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী পরিচয়ে একদল শিক্ষার্থীর এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ময়মনসিংহবাসী।

বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে ভিডিওটি শেয়ার করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ সাগর হত্যা মামলার পলাতক আসামি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্ত। ভিডিওটি শেয়ার করে তিনি লিখেন, ‘আমাদের ময়মনসিংহের ডিআইজি সাহেবের সাথে মেধাবীদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়। ভিডিওতে বলতে শোনা যায়- শিক্ষার্থীরা বলছেন- আপনি (ডিআইজি) প্রতি সপ্তাহে কেন বাড়িতে যান, তারাকান্দার ওসি আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ময়মনসিংহে নিহত রেদুয়ান আহমেদ সাগর হত্যা মামলার আসামিরা কেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন এর জবাব দিন।

ভিডিওতে বলতে শোনা যায়- শিক্ষার্থীরা বলছেন- আপনি (ডিআইজি) প্রতি সপ্তাহে কেন বাড়িতে যান, তারাকান্দার ওসি আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ময়মনসিংহে নিহত রেদুয়ান আহমেদ সাগর হত্যা মামলার আসামিরা কেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ সময় ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাদানুবাদের ঘটনা ঘটে।

এর আগে সংশ্লিষ্ট অফিসে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে স্লোগান দিতে দিতে ডিআইজির কক্ষে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে।  

এদিকে রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিআইজি কক্ষে এভাবে দিন-দুপুরে শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকির বিষয়টি নিয়ে হতবাক পুলিশসহ ময়মনসিংহের সরকারি কর্মকর্তারা। এ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত সাধারণ মানুষও। তবে গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে ডিআইজির অফিসে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও এখনো ময়মনসিংহের পুলিশ ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছে না।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। এই ঘটনা ফ্যাসিবাদী চক্রের ইন্ধন রয়েছে, বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।  

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী, জেলা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হন মহানগর জাসদের সভাপতি, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী সাগর হত্যা মামলার আসামি সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই তাকে ছাড়াতে থানায় যান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী পরিচয়ে একদল শিক্ষার্থী। এ সময় তারা ওই কাউন্সিলরকে ছাড়তে পুলিশকে চাপ দেন। কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়া কাউন্সিলর মিন্টু সাগর হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে ছাড়তে পুলিশ অপারগতা প্রকাশ করায় তারা ক্ষুব্ধ হন। মূলত ওই ঘটনার জের ধরেই পরদিন ২৮ ডিসেম্বর ওই শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ডিআইজি অফিসে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।  

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি সূত্র জানায়, ডিআইজি অফিসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী শিক্ষার্থীরা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং সাবেক শিবির নেতা মাহাদী হাসান তারেকের সহযোগী। তাদের মধ্যে অনেকেই ছাত্রলীগের বর্তমান পদধারী এবং ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী রয়েছে। তারা এর আগে বিআরটি অফিসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, সদর উপজেলার অফিস কর্তার সঙ্গে বেয়াদবিসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে ডিআইজি অফিসে বিশৃঙ্খলার নেতৃত্বদানকারীরা হলেন- ছাত্র সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সহযোগী সাইবে রাকাত, আল নূর আয়াশ, ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা মাহাদী হাসান তারেক, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কর্মী মেহেদী হাসান সিয়াম, ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগের ওয়ার্ড শাখার সহসভাপতি সাকিব হাসান রিমন, ছাত্রলীগ কর্মী কর্মী রোহান, অলি উল্লাহ, হৃদয় ও ছাত্রদল কর্মী রাকিবুল ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কর্মী নিহাল।  

এ বিষয়ে ছাত্র সমন্বয়ক ও গণঅধিকার পরিষদের সাবেক নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছিল তারা সবাই আমাদের লোক। তাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছি, চলাফেরা উঠাবসা করি। তবে ডিআইজি অফিসে আমি যাইনি। সেখানের ঘটনার দায়ভার আমরা না, ওই ঘটনার ভালোমন্দের দায় তাদের। 

তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলর মিন্টুর দুই ছেলে আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছে। তাই তার বাবা গ্রেপ্তার হওয়ার পর আমাকে জানালে আমরা কয়েকজন থানায় গিয়েছিলাম, কী অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে। আমি তাকে ছাড়াতে যাইনি। তবে আমার অনুরোধ ছিল তার সাথে যেন অন্যায় না করা হয়।

ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা মাহাদী হাসান তারেক বলেন, আমি এই ঘটনার কিছু জানি না। তবে ছেলেরা ডিআইজি অফিসে গিয়েছে, এমন খবর পেয়ে আমি তাদের ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিলাম।

তবে জামায়াত ও শিবিরের একাধিক নেতা বলেন, মাহাদী হাসান তারেক আগে শিবিরের সাথী ছিলেন। তবে এখন আর তার সাথে শিবিরের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।  

ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বলে দাবি করেছেন ছাত্র আন্দোলনের অন‍্যতম সমন্বয়ক গোকল সূত্রধর মানিক। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনা কখনোই কাম‍্য নয়। এটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনাবিরোধী কাজ। আমি চাই ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব‍্যবস্থা নেওয়া হোক।  

অভিযোগ উঠেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নাম ভাঙ্গিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কিছু দোসর সাবেক এমপি শান্ত, সাবেক সিটি মেয়র টিটু ও পরিবহন মাফিয়া আমিনুল হক শামীমের গোপন ইন্ধনে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তারা পুলিশ প্রশাসনকে চাপে রেখে আওয়ামী জনপ্রতিনিধি ও দোসরদের গ্রেপ্তার ঠেকাতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। 

এ বিষয়ে ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমান বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত। এটি আন্দোলনের চেতনাবিরোধী কাজ। মূলত আওয়ামী দোসরদের ইন্ধনে একটি গ‍্যাং এর আগেও বিভিন্ন সরকারি অফিসে বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে। এটা কাম‍্য নয়। 

ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) আখতার উল আলম বলেন, আমি এই জেলায় নতুন জয়েন করেছি। ডিআইজি অফিসের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। এর পেছনে কারা জড়িত এবং কী উদ্দেশ্যে এটা ঘটিয়েছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com