• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৭ মিনিট পূর্বে
সোহেল রানা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৪:১৭ দুপুর
bd24live style=

সলঙ্গার কুতুবেরচর মৎস্য আড়ত ঘিরে হয়েছে কর্মসংস্থান, বেড়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

সিরাজগঞ্জে জলাশয় ও পুকুরে হরেক রকমের মাছের উৎপাদন দিনদিন বাড়ছে। আর মাছ বিক্রির জন্যেই গড়ে ওঠছে নতুন নতুন মাছের আড়ত। এমন একটি বৃহৎ আড়ত গড়ে ওঠেছে সলঙ্গার কুতুবের চর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতি লি.।  আড়তটি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে নিয়ে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। এমনকি এই আড়তের মাছ দেশের বিভিন্ন প্রসেস মিল মালিকরা কিনে নিয়ে প্যাকেটজাত করে বিদেশেও রপ্তানি করছে।  আর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, যমুনা নদীর পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ জেলার নয়টি উপজেলায় মাছের উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় কতুবের চরসহ জেলায় নতুন নতুন মৎস্য আড়ত গড়ে ওঠেছে।

জানা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা, তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জে পুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জে মাছ উৎপাদন বেড়ে গেছে। জেলায় সরকারী বেসরকারী মিলে সিরাজগঞ্জে ২২ হাজার পুকুর রয়েছে। মাছ উৎপাদন বাড়ায় মাছের আড়ত বেড়ে গেছে। বর্তমানে জেলায় ৫২টি মৎস্য আড়ত রয়েছে। সিরাজগঞ্জ গোলচত্বর থেকে বনপাড়া মহাসড়ক ধরে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে গেলেই রামারচর মোড় । রামারচর মোড় থেকে সলঙ্গা বাজারের যাওয়ার রাস্তায়  কুতুবের চর এলাকায় এক বছর আগে কুতুবের চর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতি লি: নামে একটি মৎস্য আড়ত যাত্রা শুরু করেছে। সমাজভিত্তিক পুকুরে চাষকৃত মাছ ন্যায্যমুল্যে বিক্রির জন্য আড়তটি গড়ে তোলা হয়েছে।

প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে মাঝখানে ঘণ্টাখানেক বিরতি দিয়ে দুপুর ১ টা পর্যন্ত আড়তজুড়ে চলে মাছ বেচাকেনার কর্মযজ্ঞ। দিনের আলো না ফুটতেই সিরিয়াল ধরে আসছে মাছ ভর্তি বিভিন্ন যানবাহন। সেই মাছ আনলোড করে পাল্লায় তুলতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন পাল্লার ওপর। পছন্দের মাছ কিনতে ব্যাপারীরা দাম হাঁকিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি পাল্লা মাছ বিক্রি করতে কিছুক্ষণ চলছে দর কষাকষি। দর কষাকষি শেষে সর্বোচ্চ দরদাতার হাতে যাচ্ছে মাছ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সলঙ্গার রামারচর মোড় পাশে আড়তের দিকে নেমে যাওয়া রাস্তায় মাছভর্তি সারিবদ্ধ যানবাহন। মাঝখানে ফাঁকা রেখে আড়তের চারপাশে গড়ে তোলা হয়েছে শতাধিক ঘর। পুরো অংশে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ইট। আড়ৎ চলাকালে ভেতরে পা ফেলার জায়গা থাকে না। এসব আড়ৎ ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন খাবারের দোকান সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আড়তটিতে রুই, কাতলা, মৃগেল, ঠ্যাংরা, ইলিশ, কই, পাঙ্গাস মাছসহ নানা প্রজাতির মাছ আড়তে পাওয়া যাচ্ছে। ভোর থেকে আড়তটি ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ও ডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাছ ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে ডাকের মাধ্যমে আড়ত থেকে মাছ কিনে যাচ্ছে। আড়তের কর্তৃপক্ষের লোকজন বলছেন, আড়তটি গড়ে তোলায় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, পাশাপাশি পুকুরে মাছ চাষীরা ন্যায্য মুল্যে বিক্রি করতে পারছে। প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার বেশি মাছ কেনাবেচা হচ্ছে এই আড়ত থেকে।

মৎস্য আড়তদার সুলতান মাহমুদ, মাকসুদুর রহমান, আসদ আলী ও আইয়ুব আলী জানান, কুতুবের চর মৎস্য আড়তে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে  নির্বিঘেœ ন্যায্য দামে ও ন্যায্য মাপে মাছ কিনে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এই আড়তের মাছ বিভিন্ন প্রসেস মিলের মাধ্যমে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। এছাড়াও মৎস্য আড়তকে ঘিরে হাসপাতালসহ বিভিন্ন দোকানপাট ঘরে ওঠায় এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে।  

সিরাজগঞ্জের কালীঞ্জা এলাকার মাছ পাইকার জয়দবে, বিরু, অমর ,মদন ও বেলকুচির রঘুনাথ ও সজিব জানান, কুতুবের চর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতি লি: এই মাছ আড়ত থেকে  ন্যায়মুল্যে মাছ ক্রয় করে জেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারে বিক্রি করে ভাল লাভবান হই। কারণ এই আড়ত থেকে মাছ ক্রয় করলে খাজনা দিতে হয় না, বরফ কমদামে পাওয়া যায় ও পানি ফ্রিতে দেয় এই জন্য আমাদের খরচ কম হয় লাভ বেশি হয়।

সিরাজগঞ্জ বড় বাজারের মৎস্য বাবসায়ী আলম হোসেন জানান, কুতুবের চর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির মাছ আড়ত সিরাজগঞ্জ শহর থেকে কাছে হয়। অন্য মাছ আড়ত গুলা অনেক দুরে। এই আতড় থেকে মাছ কিনে নিয়ে যেতে পরিবহন করতে খরচ কম হয়। এখন থেকে মাছ কিনে খাজনা দিতে হয় না পানি ফ্রি পাওয়া যায় এতে আমাদের খরচ কম হয় ভাল বেশি হয়।

ঢাকার মাছ পাইকার আরিফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও টাঙ্গাইলের সুকুমার, রাধিকা, মিলন, ভজন কুমার বলেন, প্রতিদিন সকালে তরতাজা ছোটবড় বিভিন্ন প্রকার মাছ পানি ভর্তি ট্রাকে করে টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ,গাজিপুর ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। এতে তারা লাভবান হচ্ছে। মৎস্য আড়তটি নতুন হলেও মাছ কেনা-বেচায় সবধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। মাছ আড়তটিতে মাছ বহনের গাড়ী পার্কিং কোন টাকা লাগে না। বরফ স্বল্প মুল্যে পাওয়া যায় এবং পানি ফ্রি দিচ্ছেন আড়ত থেকে এবং মাছ কিনতে কোন প্রকার খাজনা দিতে হয় না । এ জন্য আমার মাছের দাম কম পড়ায় ক্রয় করে বিক্রি ভাল লাভবান হওয়া যায়। আড়তে চাঁদাবাজদের কোনো দৌরাত্ম্য নেই জানিয়ে তারা বলেন, নিরাপদ পরিবেশেই মাছ কিনে সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন।

কুতুবের চর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি আব্দুল হাই সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মো: রতন হোসেন জানান, কুতুবের চর মৎস্য আড়তে হরেক রকমের মাছ জেলেরা নিয়ে আসে। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকাররা ডাকের মাধ্যমে কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায়। প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়।

সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.শাহিনুর আলম জানান, নির্বিঘ্নে মাছ বেচাকেনার অন্যতম স্থান মৎস্য আড়ত। সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলায় ৭৬ হাজার ৫ মেট্রিকটন মাছের উৎপাদন বাড়ায় আড়তের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারী হিসেবে ৫২টি হলেও সংখ্যা আরো বেশী।কতুবের চরসহ বিভিন্ন মৎস্য আড়ত থেকে জীবন্ত মাছ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে জেলার অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। মাছের উৎপাদনকে ঘিরে চলনবিল প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে প্রসেস মিল স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। এতে প্রক্রিয়াজাত মাছ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com