
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ ভারতকে বাংলাদেশের মনীবের কাতারে নিয়ে গিয়েছে।
রক্তপিপাসু খুনী শেখ হাসিনার খুনের পিপাসা এখনো শেষ হয়নি। বিন্দুমাত্র অনুশোচনা না করে এই মহিলা এখনো খুনের কথা বলে আসছেন। শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিরোধে, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সমস্যা ও জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শিরোনামে এই সেমিনারের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
সারজিস আলম বলেন, আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ভারত দীর্ঘদিন আমাদের ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে দেশটিকে পীরের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই আধিপত্যবাদকে ভাঙতে হবে। একাত্তরের আগে ও পরে ভারত বাংলাদেশকে কীভাবে ব্যবহার করেছে, তা লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। এ সময় শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত ভুল করেছে। তাকে দেশে পাঠিয়ে বিচার মঞ্চে ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে ভারতের সৈন্যরা আমার দেশ লুটপাট করেছিল। আমার দেশের যখন যে ঘরে ঢুকার ইচ্ছে হয়েছে ঢুকেছে, আমার যে মা-বোনকে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে হয়েছে ছুঁয়ে দেখেছে, সম্ভ্রমহানি করেছে। এ কথাগুলো বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসা উচিত। তখনই আমরা এ রেজিমটা ধীরে ধীরে ভাঙতে পারব।
ভারতের উদ্দেশ্যে সারজিস বলেন, যে খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশের মানুষ উৎখাত করে বিতাড়িত করেছে, তাকে আশ্রয় দিয়ে পুরো বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতির বিপক্ষে আপনারা অবস্থান করছেম। এটা আপনাদের পররাষ্ট্রনীতির অনেক বড় একটি দুর্বলতা। খুনি শেখ হাসিনার জায়গা ওই বিচারের মঞ্চ। সেখানে পাঠানোর জন্য আপনারা ব্যবস্থা নিন।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সমস্যার সমাধান নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দর, পার্বত্য এলাকা ও পাহাড়িদেরকে উস্কে দিয়ে অপতৎপরতার চেষ্টা হতে পারে। ভূরাজনৈতিকভাবে আমরা চট্টগ্রামকে নিরাপদ রাখতে পারলে বাংলাদেশকেও নিরাপদে রাখতে পারব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ না করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে তা দেশবাসী মেনে নেবে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা ন্যায়ের পক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলাম, কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়তে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে বার বার বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মাদ জান্নাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর আমীর শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ উদ্দিন মাহদী, বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক ডা. এস এম সরোয়ার আলম, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট মো নাজিমুদ্দিন চৌধুরী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা খান তালাত মোহাম্মদ রাফি, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা জাকারিয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে সমন্বয়ক আবদুর রহমান, গণ অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সেক্রেটারী মুহাম্মদ ইউসুফ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ আল মাদানী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মো. নুরুল আমিন,চট্টগ্রাম মহানগর নেজামে ইসলামী পার্টির সভাপতি ক্বারী ফজলুল করীম জেহাদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আল ফুরকান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক মোহাম্মদ রিজুয়ান সিদ্দিকী, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ সভাপতি কাজী মজিবুর রহমান মুজিব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড.হুমায়ুন কবীর খালুভী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারী আল মোহাম্মদ ইকবাল, ইসলামী আইনজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এডভোকেট পারভেজ তালুকদার প্রমুখ।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর