
দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম) অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে এক লাইভ অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেন, যেখানে আলোচনা করেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে।
ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ‘লাইভে যুক্ত আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম (বীর বিক্রম)’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি নানা ঐতিহাসিক ঘটনা এবং নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
শেখ মুজিবের মৃত্যু ও সেনা অভ্যুত্থান
মেজর ডালিম বলেন, "শেখ মুজিব মারা যাননি, তিনি একটি সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন। বাকশালের পতনের পর দেশের লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে এসে উল্লাস প্রকাশ করেছে।" তার মতে, শেখ মুজিবের শাসন ছিল অত্যন্ত কঠোর এবং স্বৈরাচারী, যার কারণে মানুষ তার জুলুম থেকে মুক্তি চেয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধ এবং জিয়াউর রহমানের ভূমিকা
মেজর ডালিম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে বলেন, "পাকিস্তান বাহিনী যখন বাঙালিদের ওপর চড়াও হয়েছিল, তখন নেতারা নিরাপত্তার খোঁজে ভারত চলে যান। নেতৃত্বহীন অবস্থায় যখন মানুষ বিভ্রান্ত, তখন মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছিল। আমি তখন পাকিস্তান আর্মিতে ছিলাম। তার সেই সাহসী ঘোষণার পরই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাই।"
স্বাধীনতার স্বপ্ন এবং ভারতের প্রভাব
মেজর ডালিম আরও বলেন, ৭১-এর যুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে সাত দফা চুক্তি যখন করা হয়, তখনই বোঝা গিয়েছিল যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অন্য কোনো স্বার্থে ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি দাবি করেন, "এই চুক্তির ফলে ক্রমান্বয়ে আমাদের দেশ ভারতের করদরাজ্যে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।"
তিনি ২৪ সালের গণআন্দোলনের নায়ক ছাত্র-জনতাকে সতর্ক করে বলেন, "ভারতের সম্প্রসারণবাদী নীতি থেকে বেরিয়ে এসে ৭১-এর মতো আরেকটি স্বাধীনতা সংগ্রাম করতে হবে। তা না হলে বিপ্লব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।"
জাতীয় সঙ্গীত ইস্যু
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মেজর ডালিম বলেন, "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান নয়, বরং কাজী নজরুল ইসলাম বা অন্যান্য দেশীয় কবিদের গান জাতীয় সঙ্গীত হতে পারত। ভিনদেশি কবির লেখা গানকে জাতীয় সঙ্গীত বানানো পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।"
লাইভে মেজর ডালিম ইতিহাসের বিতর্কিত অধ্যায়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। তার বক্তব্য মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
সর্বশেষ খবর
অন্যান্য... এর সর্বশেষ খবর