![BD24LIVE.COM](https://www.bd24live.com/bangla/public/logo-bd24live.png)
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত জনপদের তবলা পাড়া এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে গত ২০১৮ সালে নির্মাণ করা হয় "তবলাপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়'। ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হওয়া বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০ জন। তবে নতুন বছরে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যালয়টি মানিকছড়ি উপজেলার মধ্যে হলেও পার্শ্ববর্তী গুইমারা ও রামগড় উপজেলার সীমানা ঘেঁষা। যার ফলে তিনটি উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা ও দুর্গম এলাকায় বিদ্যালয়টির অবস্থান হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া সরেজমিনে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে বাঁশ, কাঠ ও টিনশেটের বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি দেখে প্রথমেই মুগ্ধ হন ইউএনও তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া ও তার সফরসঙ্গী সহকারি কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফকাত আলী।
এসময় উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ এ কর্মকর্তাদের আগমে আনন্দিত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সেখানে উপস্থিত অভিভাবকেরা। কেননা এই প্রথমবার তাদের বিদ্যালয়ে যে কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তার আগমন ঘটেছে। পরে বিদ্যালয়ের মাঠে মুক্ত আলোচনা হয় শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ পরিচালনা পর্ষদের সাথে। এসময় বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্র ও নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন তারা। পরে সকল সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন ইউএনও তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া।
পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আফরোজ ভুঁইয়া বলেন, শুধুমাত্র উপজেলা সদরে নয়, গুণগত শিক্ষা ছড়িয়ে পড়ুক প্রত্যন্ত জনপদেও। তাই অনগ্রসর জনপদে শিক্ষা কার্যক্রম বিস্তারের লক্ষ্যে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করতে আজকের আগমন। এসময় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোসহ নানা সমস্যা স্বচক্ষে দেখে তা সমাধানের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেন তিনি। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাইসাইকেল উপহার দেন এবং উপস্থিতি অভিভাবকদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিনুবাই মারমা বলেন, উক্ত প্রতিষ্ঠানে চারজন শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত থেকে শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। দুই তিন মাস পরপর কিছু টাকা বেতন পেলেও তাতে সংসার চলে না। তারপরেও প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তাছাড়া গত ছয় বছরে উপজেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা তাদের প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেনি। আজই প্রথম কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা এলেন। এতে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী অত্যন্ত খুশি হয়েছেন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মংসাপ্রু চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান করে আসছি। তাও প্রতি মাসে দিতে পারছি না। দুতিন মাস পরপর ধার্যকৃত বেতনের আংশিক বেতন দিতে পারি। পুরোটা প্রদান করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নামেমাত্র বেতন ধার্য করা হলেও তা পরিশোধ করতে পারেন না এখানকার অসচ্ছল অভিভাবকরা। এসময় তিনি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণসহ নানা সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনসহ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর