- ঢাকা
- ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫
- শেষ আপডেট ৬ মিনিট পূর্বে
অযত্ন আর অবহেলায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে শেরপুরে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী হিজরাদের একমাত্র আবাসন কেন্দ্রটি। সম্প্রতি রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দুর্বৃত্তরা হামলা চালায় ওই হিজরা পল্লীতে। এতে আবাসন কেন্দ্রটির অনেক জিনিজপত্র খোয়া গেছে বলে অভিযোগ করেন আবাসনে বসবাসরত হিজরারা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান বিষয়টি ইতোমধ্যেই জানতে পরেছি। তাই পর্যবেক্ষন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
সুত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৭ জুন শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় এলাকায় জেলা প্রশাসনের উদ্দ্যোগে ২ একর জমির ওপর নির্মিত হয় হিজরাদের এই আবাসন পল্লীটি। সেই সময় হিজড়া জনগোষ্ঠির ৪০ জনের মাঝে জমিসহ ঘরবাড়ী বুঝিয়ে দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব ।
সেখানে বসবাসরত হিজড়ারা জানায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ৪ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তরা হামলা করে ঘরের আসবাবপত্র গ্যাসের চুলা টিউবওয়েলসহ সমস্ত কিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। লুট হওয়া মালামাল ফেরত এবং দুর্বৃত্তদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামে হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা। তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও মিছিল করেও কোন প্রতিকার পাননি।
পরবর্তীতে হিজড়া পল্লীতে হামলার বিষয়টি তৎকালীন শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর নজরে আসলে তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে হিজড়াদের পুনরায় আবাসন কেন্দ্রটিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেন। সেই থেকে তারা তাদের আশ্রয় ফিরে পেলেও বর্তমানে অনেকটাই কষ্টে বসবাস করতে হচ্ছে হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষদের।
ওই পল্লীর বাসিন্দা হিজরা আখি আক্তার বলেন, আমরা ভিক্ষাবৃত্তি নয় আমরা কর্মের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদেরকে যেন কর্মের সুযোগ করে দেয় সেটাই আমাদের সরকারের কাছে দাবি জানাই।
শেরপুর জেলা হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি নিশি সরকার বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে আমাদেরকে আবাসনের ব্যবস্থা করে দিলেও ৪ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তদের হামলার পর প্রশাসন থেকে কোন খোঁজখবর আমাদের নেয় নাই।
বিএনপি নেতা হযরত আলী অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে পুনরায় আমাদেরকে আবাসনে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এক সময় আমরা সরকারি যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেতাম এখন আর আমরা তা পাচ্ছি না। আমাদের হিজড়াদের দাবি সরকার যেন আমাদেরকে পুনরায় সরকারি সুযোগ সুবিধা দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেন।
শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, হিজড়া পল্লীতে দুর্বৃত্তদের হামলার খবরটি শোনার পর আমি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে পুনরায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। আসবাবপত্র কিনে দিয়েছি এবং নগদ টাকাও দিয়েছি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত তাদেরকে স্থায়ীভাবে কর্মের ব্যবস্থা করে দেওয়া।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় এলাকায় অবস্থিত তৃতীয় লিঙ্গের আবাসন কেন্দ্রটি নানান সমস্যায় জর্জরিত। এটি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের কেউ যদি সমস্যাগুলো লিখিতভাবে প্রশাসন বরাবর জানায় তাহলে প্রশাসন তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর
