
চিকিৎসা সেবা মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মিত করা হয় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নে সুঘাট ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। সেখানে আশপাশের ৩০ গ্রামের নারী ও শিশুরা কাঙ্ক্ষিত জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, জয়লা জুয়ান গ্রামে স্বাস্থ্য বিভাগের ৯১ শতাংশ জমিতে ২০১৯ সালে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা মূল ভবন সুঘাট ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি নির্মিত হয়। এখানে ১০টি শয্যাসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি থাকলেও আজও স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে চালু হয়নি। যার ফলে আশপাশের ৩০ গ্রামের নারী, শিশু, কিশোর ও কিশোরীরা কাঙ্ক্ষিত জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেখানে নেই কোনো মেডিকেল অফিসার ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা। ২জন মেডিকেল অফিসার ও ৪জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে সংযুক্তিতে আছেন ১ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, ধুনট থেকে ১ জন নার্স। এ ছাড়াও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, পরিচ্ছন্ন কর্মি, আয়া এবং আউট সোর্সিং থেকে ৪ জন সহ মোট ৯জন কর্মরত রয়েছেন।
জয়লা গ্রামের হামিদ পলাশ, রুবেল ও উপজেলার গুয়াগাছি গ্রামের হায়দার আলী, আল মামুন জানান, জহুরুল ইসলাম জানান, ওই জায়গায় বহু আগে নির্মিত ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছিল। সেটি ভেঙ্গে নতুন হাসপাতাল করায় আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। ৫ বছরেও এটি পরিপূর্ণভাবে চালু হয়নি। স্বল্প পরিসরে কয়েকজন স্টাফ দিয়ে সীমিত আকারে সেবা দিচ্ছে অধিকাংশ মানুষ জানে না। কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করতে পারলে আমরা তৃণমূল থেকেই আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা নিতে পারব। মা ও শিশু কল্যাণটির চালু না হওয়াতে আমাদের ১৫ কিলোমিটার দূরে শহরেই যেতে হচ্ছে।
দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফ.ডাব্লিউ.ভি) মামবুবা খানম জানান, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি এখনও চালু হয়নি। আমরা নিয়মিত এখান থেকে আগতদের পরামর্শ ও ওষুধপত্র বিতরণ করছি। এটি চালু হলে গর্ভবতী নারী, প্রসবকালীন সেবা, প্রসূতি নারী ও নবজাতকসহ ১৫ বছরের কম বয়সী কন্যা শিশুরা বিনামূল্যে সেবা পাবে। পরিপূর্ণভাবে চালু করার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বর্তমানে মাসে ২-৩টি করে ডেলিভারি করানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুমাইয়া আক্তার জানান, সুঘাট ইউনিয়ন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি গ্রামের মানুষেরা স্বাভাবিক প্রসব থেকে শুরু করে সিজারিয়ান অপারেশনসহ মা ও শিশুর নানাবিধ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু জনবল সংকট।
বর্তমানে ৯ জন স্টাফ দিয়ে কেন্দ্রটি পরিচালনা করা হচ্ছে। যে পরিকল্পনা নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে সেভাবে এখনও উদ্বোধন ও কার্যক্রম চালু হয়নি।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আব্দুল আলিম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি নির্মাণ করে ২০১৯ সালের ২৬ জুন বগুড়া পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালককে হস্তান্তর করেছেন। কেন্দ্রটির দৃষ্টিনন্দন দুটি ভবন নির্মিত হয়েছে। যন্ত্রপাতিও অনেকটা আছে। কিন্তু জনবল নিয়োগ না হওয়ায় কেন্দ্রটি চালু হচ্ছে না। ভবনটি যেন নষ্ট না হয়। যে কয়জন আছেন তাদের দিয়ে প্রাথমিকভাবে জনসেবা দেওয়া হচ্ছে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জনকল্যাণের স্বার্থে দ্রুত মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি চালুর ব্যাপারে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর