সবুজ ক্ষেত জুড়ে শুধু লাউ আর লাউ। মাচার ওপরে গাছ আর তার নিচে ঝুলছে শত শত লাউ। দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।
এই লাউয়ের আবাদ করে লাখপতি বনে গেছেন মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার বাছিরপুর গ্রামের চাষি সালেহ আহমেদ।
দীর্ঘ ৭ বছর প্রবাসে ছিলেন সালেহ আহমেদ। এক বছর আগে দেশে এসে বেকার হয়ে পড়েন বেকার। প্রবাসে যাওয়ার আগে তিনি করতেন কৃষি কাজ।
পূর্বের কৃষি কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় এবার বাড়ির পাশের ২০ শতাংশ জমিতে লাউয়ের আবাদ করেছেন তিনি।
তার ক্ষেতের উৎপাদিত লাউ যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। শুধু লাউ নয় বেগুন, টমেটো, শষাসহ নানা রকম সবজির আবাদ করে তিনি এলাকায় মডেল কৃষকে পরিণত হয়েছেন।
জানা যায়, ছোট বেলা থেকেই কৃষির প্রতি এক অন্যরকম টান ছিল তার। তাইতো দশ বছর আগে থেকেই কৃষির আবাদ করতেন তিনি। পরে কৃষিতে সুবিধা করতে না পেরে গত ২০১৭ সালে তিনি পাড়ি জমান দুবাই।
৭ বছর বিদেশে থেকে ২০২৩ সালের শেষের দিকে দেশে ফিরে কিছু দিন বেকার থাকার পর কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। সেই থেকে তার চাষাবাদ শুরু। তার বাড়ির পাশের বিশ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে গত তিন মাস আগে লাউয়ের আবাদ শুরু করেন।
জমি তৈরি, সার, সেচ, কিটনাশক, মাচা তৈরি করে নিজ হাতে পরিচর্যার মাধ্যমে গাছ লাগানোর ১০০ দিনের মাথায় লাউ পাওয়া শুরু করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি প্রতিদিন ৪০/৫০ টি লাউ ৫০/৬০ টাকা ধরে বিক্রি করতে পারছেন। খরচ বাদে এ জমি থেকে লাউ বিক্রি করে তিনি লাখ টাকা আয় করেছেন। ঠিকমতো পরিচর্যা করলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও অর্ধলক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
বিষমুক্ত লাউ চাষের কারণে বাজারে তার লাউয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই তো দিন দিন কৃষির প্রতি টান বাড়ছে তার। তার লাউ চাষ দেখতে আশেপাশের উপজেলা থেকে অনেকেই আসছেন। সালেহ আহমেদের সাফল্য দেখে অনেকেই কৃষি উদ্যোক্তা হতে কৃষির দিকে ঝুঁকছে।
কৃষক সালেহ আহমেদ জানান, কম শ্রম, অল্প পুঁজি ও সীমিত জমিতে লাউ চাষে অতিরিক্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। লাউ চাষে তিনি কোনো ধরণের রাসায়নিক সার ও বিষ প্রয়োগ করেননি। পরবর্তিতে আরও বড় পরিসরে লাউয়ের পাশাপাশি বিষমুক্ত ও নিরাপদ উপায়ে অন্যান্য সবজি চাষ করতে চান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মাহমুদুল আলম খান জানান, সালেহ আহমেদ প্রবাস থেকে ফিরে লাউ চাষ করে ইতিমধ্যে উপজেলায় একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন। তিনি লাউ ছাড়াও বেগুন, টমেটোসহ অন্য সবজির আবাদ করেছেন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে তাকে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহারসহ যাবতীয় কৃষি পরামর্শ দিয়ে আসছি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর