
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে, সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষায়, অশালীন কার্যকলাপ বন্ধে ক্যাম্পাসে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি।
জানা যায়, যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অশালীন ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানগুলোতে টানা কয়েকদিন যাবৎ রাত ০৮-০৯ টার সময় এ অভিযান পরিচালনা করেন প্রক্টরিয়াল বডি। অভিযানগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে সতর্ক করছে প্রক্টরিয়াল বডি।
পাশাপাশি অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানগুলোতে কোন ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থী যুগল একসাথে না থাকে সে বিষয়েও সতর্ক করছেন। এদিকে অশালীন কার্যকলাপ বন্ধের পাশাপাশি ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে মাদক ও প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধেও পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আমাদের সবার জন্য একটি জ্ঞানচর্চার স্থান। এটি আমাদের শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্র। ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুন্দর ও সুস্থ রাখার দায়িত্ব শুধু প্রশাসনের নয়, বরং আমাদের সবার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাখার জন্য প্রক্টর স্যারের টহল একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এটি শুধু অশালীন কার্যকলাপ রোধ করতেই সহায়তা করে না, বরং আমাদের সবার মধ্যে দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। আমি মনে করি, এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা ক্যাম্পাসের সুনাম ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, কোনো ধরনের পূর্ব নির্দেশনা ছাড়া এ ধরনের অভিযান ঠিক নয়। প্রশাসন আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেন কিন্তু গাড়ির হেডলাইট দিয়ে কারোর মুখে দীর্ঘক্ষণ লাইট ধরে রাখা ঠিক নয়। এটা কেমন নিয়ম, আমার কাছে বোধগম্য নয়! প্রশাসনের উচিত অশালীন কার্যকলাপ বন্ধে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা।
এছাড়া ক্যাম্পাসে প্রশাসনের মাদক ও প্রকাশ্যে ধূমপানের বিষয়ে কোনো অভিযান দেখছি না অথচ হলগুলোতে নিয়মিত গাঁজার গন্ধ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের উচিত সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হলো আমাদের অ্যাকাডেমিক এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের অন্যতম কেন্দ্র। এখানে আমরা শুধু পাঠ্য বইয়ের জ্ঞান অর্জন করি না, বরং ব্যক্তিত্ব গঠন ও সামাজিক দায়িত্ববোধও শেখার সুযোগ পাই। সম্প্রীতি দেখা যাচ্ছে ক্যাম্পসে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। ক্যাম্পাসের পরিবেশ সঠিকভাবে বজায় রাখা এবং সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চলতে সহায়তা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
প্রক্টর স্যারের টহল এই ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি আমাদেরকে শৃঙ্খলা এবং নিয়ম মেনে চলার প্রেরণা দেয়, পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক হয়। আমি মনে করি, এই উদ্যোগটি ক্যাম্পাসের ভালো পরিবেশ তৈরিতে অত্যন্ত কার্যকর এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ।
এ বিষয়ে যবিপ্রবির প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন ইঞ্জ. বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমারা এ অভিযান পরিচালনা করছি। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি একটি মুক্ত চিন্তার স্থান, যেখানে সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন ঘটনার যেন না ঘটে সেজন্য আমরা রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছি।
ভবিষ্যতেও এই ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা আমাদের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীর সহযোগিতা চাই।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর