
চট্টগ্রামের কালুরঘাট বিএফআইডিসি রোডে নির্মিত ‘আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার’ শিগগির চালু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সেন্টারের অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন নির্মাণের অপেক্ষা। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য নির্মাণাধীন সাব-স্টেশনের মালামাল আসবে অন্য দেশ থেকে, যেটা সময়সাপেক্ষ। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া গেলেই কার্যক্রম শুরু হবে আইটি সেন্টারের কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আইটি সেন্টারটি হবে ৬ তলা ভবনের। যা সাড়ে ৩৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের হবে। প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় তলায় নির্মাণ করা হবে একটি ক্যান্টিন ও একটি ৫০০ কেভিএ সাব-স্টেশন। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ২টি লিফট স্থাপন, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্র ক্রয়, ৫০০ কেভিএ জেনারেটর সরবরাহ ও স্থাপন, ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপন এবং এসি কেনার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) সূত্রে জানা গেছে, বিএফআইডিসি রোডে সিটি কর্পোরেশনের ১১ দশমিক ৫৫১ একর জায়গা রয়েছে। পুরো জায়গায় পূর্ণাঙ্গ হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার কথা ছিল। এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১১ মার্চ সিটি কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতাভুক্ত জায়গার মধ্যেই আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২০ সালে এ সেন্টার নির্মাণে সিটি কর্পোরেশন থেকে ২ একর জায়গা বুঝে নেয় হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
চসিকের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, হাইটেক পার্ক নির্মাণে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় করবে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা তিন বছরের মধ্যে। চুক্তি অনুযায়ী চসিক ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ করে পাবে।
জানা গেছে, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে সেন্টারটির নাম ছিল ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার’। গত ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কমিটির ৩২তম সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সারা দেশের এ ধরনের পার্কগুলোর নাম পরিবর্তন করা হবে। এরপর ‘শেখ কামাল’ বাদ দিয়ে শুধু ‘আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার’ রাখা হয়।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার’ স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। ৫২২ কোটি ৫৪ লাখ ৯২ হাজার টাকায় অনুমোদিত প্রকল্পের আওতায় ৮টি জেলা তথা চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নাটোর, বরিশাল, মাগুরা, নেত্রকোণা ও রংপুর জেলায় আইটি পার্ক নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রকল্পে। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর প্রকল্পের ব্যয় ৫৩৩ কোটি ৫৪ লাখ ৯২ হাজার টাকায় উন্নীত করে অনুমোদন দেয় একনেক। এতে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ আবারও ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক মো. হুমায়ন কবীর বলেন, অবকাঠামোগত কাজ শেষ। আগামী জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ আছে। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্যই আটকে আছে। ওখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য একটি সাব স্টেশন হবে। সাব স্টেশনের কাজ চলছিল। একমাস আগে চুরির ঘটনা ঘটে, সাব স্টেশনের মালামাল নিয়ে যায়। এসব মালামাল আবার বাইরে থেকে আনতে হয়। সেজন্য একটু সময় লাগছে।
প্রসঙ্গত, মূল প্রকল্পটির আওতায় চট্টগ্রামেও আইসিটি (তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি) খাতে দক্ষ জনশক্তি ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কালুরঘাট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪ দশমিক ৮৩ জায়গায় আইটি সেন্টার নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। শুরুতে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৪৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। পরবর্তীতে তা বেড়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর