• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩১ মিনিট পূর্বে
মো: মিজানুর রহমান
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৪৫ বিকাল
bd24live style=

বিদ্যুতের আলোয় অধিক মুনাফার স্বপ্ন ড্রাগন চাষি মিজানুরের

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ  উপজেলায় অসময়ে ড্রাগন ফল পেতে রাতের বেলায় ড্রাগনের বাগানে খুঁটিতে খুঁটিতে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন। এভাবে চাষাবাদকে বলা হচ্ছে 'লাইট পদ্ধতি'। শীতকালে রাতের বেলা দিনের পরিবেশ সৃষ্টি করে ড্রাগন চাষের এমন পদ্ধতিই সবার আগে ব্যবহার করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁদবা গ্রামের খন্দকার তবিবুর রহমানের ছেলে "মর্ডান অ্যাগ্রো ফার্ম"- এর স্বত্বাধিকারী খন্দকার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে ২০১৯ সালে প্রথম ৮ বিঘা জমিতে ড্রাগনের চাষ শুরু করেন তিনি। 

২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি তার ২ বিঘা জমিতে লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। মোট ৪৫০ টি ড্রাগনের খুঁটি রয়েছে তার বাগানে। যার প্রত্যেকটিতে ১৫ ওয়াটের বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বলে বিকেল ৫ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। অপরদিকে ভোর ৪ টা ৩০ মিনিট থেকে সকাল ৬ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। তার ড্রাগন ক্ষেতের প্রতিটি খুঁটিতে বৈদ্যুতিক বাল্ব সংযোগ করা বাবদ খরচ হয়েছে ৩ লক্ষ টাকা। আর প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল বাবদ খরচ হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার টাকা।  মূলত দিনের দৈর্ঘ্য আলোর মাধ্যমে  বাড়িয়ে অসময়ে ড্রাগন উৎপাদন করা হয়  মৌসুম পরবর্তী ছয় মাস। এ পদ্ধতিতে কৃষক তার বাগান থেকে মোটামুটি ছয় থেকে নয় বার ফল সংগ্রহ করতে পারবেন। গরমকালে তথা জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত  ড্রাগনের ভরা মৌসুমে ১২ থেকে ১৩ বার ফল সংগ্রহ করা যায়। এ সময় একটি ড্রাগন গাছে ফুল থেকে ফল সংগ্রহ পর্যন্ত সময় লাগে ২৫ থেকে ২৭ দিন। 

অপরদিকে, শীতের সময় রাতের তাপমাত্রা অনুযায়ী ৩০ থেকে ৫০ তম দিন পর্যন্ত সময় লাগে ফল সংগ্রহের জন্য। শীতকালে রাতের বেলা দিনের পরিবেশ সৃষ্টি করে ড্রাগন চাষের এমন উদ্যোগ নিয়ে  ইতিমধ্যে ভালো  ফলন পেতে শুরু করেছেন ড্রাগন চাষি মিজানুর রহমান। তিনি তার ড্রাগন ক্ষেতে ড্রিপ ইরিগেশন এর মাধ্যমে সেচ দেওয়াসহ জৈব বালাইনাশক এবং পরিমিত পরিমাণে রাসায়নিক সার কীটনাশক ব্যবহার করছেন। প্রথমবার লাইটিং পদ্ধতিতে ফল সংগ্রহ করে তিনি প্রায় এক লক্ষ টাকা বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তার বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর ফুল ও ফল রয়েছে। ভালো বাজার পেলে মাস খানেকের মধ্যে ফল সংগ্রহ করে বিক্রি করা যাবে। আর এবার তিনি আশা করছেন প্রায় ৫ লাখ টাকা তিনি তার ড্রাগন ক্ষেত থেকে উৎপাদিত ড্রাগন বিক্রি করতে সক্ষম হবেন। তার সফলতা দেখে এখন অনেকেই এ পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। 

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলায় সর্বমোট ৩২৮ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করা হয়। ২০২৪ মৌসুমে এই উপজেলায় ৭ হাজার ৩৮০ টন ড্রাগন উৎপাদন হয়।

সরেজমিনে উপজেলার কালুখালী সড়কের পাশে অবস্থিত মিজানুর রহমানের ড্রাগন বাগানে যেয়ে দেখা যায়, রাতের অন্ধকার ভেদ করে শত শত বৈদ্যুতিক বাতি একসঙ্গে জ্বলছে। দূর থেকে আলোর রোশনাই নজর কাড়ে রাতের বেলা সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সকলের। দেখে মনে হয় আকাশে তারা নেমে এসে যেনো  ড্রাগন ক্ষেতে জ্বলছে। সে এক মনোরম দৃশ্য। রাতে এই দৃশ্য দেখতে অনেকেই ছুটে আসছেন মিজানুর রহমানের  ড্রাগন বাগানে। শুধু তাই নয়; তার  লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ দেখে ইতিমধ্যে উপজেলার বানুড়িয়া গ্রামের তারেক মোহাম্মদ  তার দুই বিঘা জমিতে একই গ্রামের উজ্জ্বল বিশ্বাস ১৪ বিঘা জমিতে, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নোমান শেখ ৩ বিঘা জমিতে, একই গ্রামের  সাখাওয়াত হোসেন দেড় বিঘা জমিতে, মিন্টু শেখ দেড় বিঘা জমিতে এবং মোহাম্মদ মুজিত ১০ বিঘা জমিতে লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। বানুড়িয়া গ্রামের ড্রাগন চাষি মোহাম্মদ  তারেক জানান, মিজানুর ভাইয়ের লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ দেখে আমিও শুরু  করেছি। মূলত অসময়ে ফল বিক্রির মূল উদ্দেশ্যেই লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষাবাদ করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন চাষি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

অন্যদিকে এই ফলটি সারা বছর পাওয়া যাচ্ছে। হাতেগোনা কয়েকজন চাষি এই পদ্ধতিতে ফল উৎপাদন করায় বাজারে এর বেশ চাহিদা থাকে। তবে মিজানুর ভাইয়ের দেখাদেখি এখন অনেকেই লাইটিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। 

ঢাকার ড্রাগন ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম জানান, শীতকালে শৌখিন ড্রাগন  চাষীরা যেমন লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন উৎপাদন করছেন, তেমনি এ সময় একটু বেশি দাম হলেও শৌখিন মানুষ পছন্দের এ ফলটি পরিবার-পরিজন নিয়ে খাওয়ার জন্য কিনছেন। আর মফস্বল অঞ্চল থেকে এসময় ড্রাগন ফল আমি বা আমার মতো পাইকাররা  কিনে ঢাকাসহ বড় বড় শহরে তা বিক্রি করছি। খরচ খরচা বাদে আমাদেরও ভালো মুনাফা থাকে। 

কালীগঞ্জে লাইটিং পদ্ধতিতে সর্ব প্রথম ড্রাগন চাষ করা কৃষি উদ্যোক্তা খন্দকার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, অসময়ের ড্রাগন উৎপাদনের কার্যকারী একটি পদ্ধতি হলো লাইটিং পদ্ধতি। আমি এটি শুরু করেছি পরীক্ষামূলকভাবে। সঠিক পরিচর্যা করায় আমার বাগানে ভালো ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। ফলের আকার এবং ওজনও ভালো । আমি আশাবাদী এ পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ করে আমি লাভবান হব। 

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন,  ড্রাগন ফল অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উচ্চমূল্যের একটি ফল। অমৌসুমে ড্রাগন ফল উৎপাদন করার ফলে কৃষক বাজার মূল্য বেশি পাই। তাই লাইটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ একটি লাভজনক কার্যক্রম। কালীগঞ্জে মিজানুর রহমানসহ অনেকেই এই পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। আধুনিক এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে কালীগঞ্জ উপজেলার ড্রাগন চাষ আরো বেশি সমৃদ্ধ হচ্ছে বলে আমি মনে করি। তাই উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ওই সকল ড্রাগন চাষীদের প্রয়োজনীয় সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com