
পৌষ শেষ মাঘের শীত বাঘের গায় এ প্রবচনই যেন হাওরাঞ্চলে এখন মাঘের শুরু থেকেই বুঝিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতি। দিনের আলো নেভার পূর্বেই নামতে শুরু করে কুয়াশা।
ভোর সকাল থেকে কনকনে বাতাস যেন বাড়িয়ে দিচ্ছে শীতের দাপট। শীত উপেক্ষা করেও কাজ করতে বাইরে বের হতে দেখা গেছে অধিকাংশ হতদরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষজনকে।
কয়েকদিন আগেও রাতের বেলায় শীতের তীব্রতা এতোটা ছিল না। তবে মাঘের শুরুতে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছেন সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের মানুষ। জেলার ১২টি উপজেলায় ও বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা তীব্র শীতে আক্রান্ত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ কনকনে শীত নামায় উষ্ণ কাপড়ের দোকানে লেমেছে মানুষের ভিড়। গরম কাপড়ের বেচাকেনাও বেড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে-খাওয়া মানুষ। হঠাৎ আবহাওয়ার বৈরী প্রভাবে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলে।
সে কারণে হাসপাতালগুলোতে দেখা যাচ্ছে শীতকালীন রোগীদের আনাগোনা। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। এজন্য শিশু ও বৃদ্ধদের সবসময় গরম কাপড় পরিয়ে রাখার পাশাপাশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জেলা শহরের হাসন নগর এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম জানান, সকাল থেকে প্রচুর কোয়াশা পড়েছে আর ঠান্ডাও বেড়েছে। সূর্যের দেখা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। কিন্তু কিছুই করার নেই কারণ বের হতে হবে তাই বেড় হয়েছি।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ের কৃষক জহির মিয়া জানান,শীতের তীব্রতা বাড়ছে হাওর পারে। অসহায় দরিদ্র পরিবারের মানুষজন শীতে কষ্ট করছে। শ্রমজীবী মানুষজন শীতের মধ্যেই সকাল হলে কাজে বের হচ্ছেন। শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে তাহিরপুর উপজেলার লাকমা গ্রামের বাসিন্দা আল আমিন জানান, সন্ধ্যার পর থেকে শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। ভোরে ঠান্ডা বাতাসেও বেড়ে গেছে দু দিন ধরে। কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে আকাশ ও চারপাশ। সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইউএইচএফপিও ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান জানান, শীত বাড়ছে হাওর এলাকায়। ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু,নারী,পুরুষ ও বৃদ্ধরা। হাসপাতালে আসা তাদেরকে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানান, হাওর এলাকায় শীত বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে শীতার্ত পরিবার গুলোর মধ্যে সরকারি ভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা শুরু করা হয়েছে। আরও বিতরণ করা হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর